বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ হায়দরাবাদে ‘স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি’ মূর্তি উন্মোচন করবেন। ‘স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি’র অনেক মহত্ব রয়েছে। এই কারণেই তেলেঙ্গানা সরকারও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে নিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিজিপি শ্রীরাম নগরের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন।
শ্রী রামানুজাচার্যের স্মরণে ‘স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি’ নির্মিত হয়েছে। তিনি ১১ শতাব্দীর একজন ভক্তি সাধক ছিলেন এবং আস্থা, বর্ণ সহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে সমতার ধারণা প্রচার করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দ্বারা জারি করা একটি বিবৃতি অনুযায়ী, এই মূর্তির উচ্চতা ২১৬ ফুট যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধ্যানমগ্ন অবস্থায় মূর্তি। এতে প্রায় ১৮০০ টন লোহা ব্যবহার করা হয়েছে।
স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি তৈরিতে সোনা, রৌপ্য, তামা, পিতল ও দস্তার বিশেষ ব্যবহার করা হয়েছে, যা এই মূর্তির আকর্ষণকে বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। মূর্তি এবং পুরো মন্দির কমপ্লেক্সটি ত্রিদন্ডী শ্রী চিন্না জিয়ার স্বামীর দ্বারা ধারণা করা হয়েছে।
এই মূর্তিটির পাশাপাশি আরও ১০৮ টি মন্দির তৈরি করা হয়েছে, যেগুলির কারুকার্য এমন যে কয়েক মিনিটের জন্য অবাক করে দেয় সকলকেই। এছাড়াও ১২০ কেজি সোনা ব্যবহার করে আচার্যের একটি ছোট মূর্তিও তৈরি করা হয়েছে। তেলেঙ্গানার বৃহৎ এই মূর্তিটির নাম দেওয়া হয়েছে “স্ট্যাচু অফ ইকুয়ালিটি”। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সাধু চিন্না জিয়ার স্বামীর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ১৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই বছর থেকে এটি দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।
বৃহদাকার এই মূর্তিটি তৈরির জন্য প্রথমে ১৪ টি মাটির মূর্তি তৈরি করা হয়। তারপর সেখান থেকে চারটি মূর্তি বেছে নিয়ে একটি চূড়ান্ত মূর্তি বানানো হয়। পাশাপাশি, মূর্তিটি ঠিক কি রকম হবে তা নিয়ে ব্যাঙ্গালোরে একটি থ্রি-ডি মডেল বানানো হয়। তারপরে একটি নির্মাণ সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়।
মূর্তিটির উচ্চতা ১০৮ ফুট, মূর্তি সহ মোট স্ট্যাচুটির উচ্চতা ২১৬ ফুট, মূর্তিটি যে পদ্মের আসনে বসে রয়েছে সেটির উচ্চতা ২৭ ফুট। যার মধ্যে পদ্মের পাঁপড়ি রয়েছে ৫৪ টি। পাশাপাশি, সিঁড়ি রয়েছে মোট ১০৮ টি এবং মোট ৩৬ টি হাতি বানানো হয়েছে। মূর্তির হাতে যে দন্ডটি রয়েছে তার উচ্চতা ১৩৫ ফুট। তবে, এইভাবে এগুলি বানানোর পেছনে একটি কারণও রয়েছে!
সমস্ত সংখ্যাগুলিকে যোগ করলে দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যেকরই যোগফল হচ্ছে “৯”, যেহেতু এই সংখ্যাটিকে একটি “শাশ্বত সংখ্যা” হিসেবে ধরা হয় তাই মূর্তি এবং মন্দিরের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেটির ব্যবহার চোখে পড়ে।
এই প্রসঙ্গে সাধু চিন্না জিয়া স্বামী জানান যে, আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগে চেন্নাইয়ের শ্রী পেরম্বিদুরের কাছে অবতার রূপে জন্মগ্রহণ করেন স্বামী রামানুজাচার্য। প্রায় ১২০ বছর বেঁচেছিলেন তিনি। তাঁর ভাবধারা এবং জীবনীকে ফুটিয়ে তুলতেই এই মূর্তি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, বিজ্ঞানের সাথে সাথে তাল মিলিয়েই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। মূর্তি তৈরিতে তামা, দস্তা, রূপো, সোনা এবং টিনের ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও, মন্দির নির্মাণে লোহা, ইস্পাত এবং স্টিলের প্রয়োগও করা হয়েছে।
প্রায় ৪৫ একরের এই বিরাট প্রাঙ্গণে স্বামী রামানুজাচার্যের মন্দিরের পাশাপাশি, বিষ্ণুরও ১০৮ টি মন্দির তৈরি হচ্ছে। একদিনে প্রায় তিরিশ হাজার ভক্ত দর্শন করতে পারবেন এই মন্দির।