বাংলাহান্ট ডেস্ক: সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের (lata mangeshkar) সঙ্গে সঙ্গে অবসান হয়েছে একটা যুগের। সঙ্গীতের স্বর্ণযুগ নিজের সঙ্গেই নিয়ে গিয়েছেন সরস্বতীর আশীর্বাদধন্যা। রয়ে গিয়েছে তাঁর গাওয়া চিরস্মরণীয় গানগুলি। সেই তালিকায় সর্বাগ্রে জায়গা করে নেবে ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো’, যে গান লতার কণ্ঠে শুনে চোখ ভিজেছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুরও।
১৯৬২ সালে ভারত চিন যুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা হয়েছিল এই গান, যাকে অমর বানিয়েছেন লতা। তাঁর অসামান্য কণ্ঠস্বর ও গায়কীর জন্য বছরের পর বছর ধরে একই ভাবে জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে এই গান। যতবারই শোনা হোক না কেন, চোখে জল আসতে বাধ্য। কিন্তু গানটির গায়িকার নাম তো সকলেই জানেন। কে লিখেছিলেন এমন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গান, তা কেউ জানে?
গানটি লিখেছিলেন কবি প্রদীপ (kavi pradeep)। সাহিত্য সংষ্কৃতির জগতে জনপ্রিয় নাম কবি প্রদীপ। একজন নামী কবি এবং গীতিকার ছিলেন তিনি। ১৯১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্য প্রদেশের উজ্জয়িনীর বড়নগরের জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবি প্রদীপ। তাঁর আসল নাম রামচন্দ্র নারায়ণ দ্বিবেদী। পরবর্তীকালে কবি প্রদীপ নামেই পরিচিতি পান তিনি।
১৯৪০ সালে ‘বন্ধন’ ছবিতে লেখা গানের দৌলতে জনপ্রিয়তা পান কবি প্রদীপ। ১৯৪৩ সালে তাঁর লেখা ‘দূর হটো এ দুনিয়া ওয়ালো হিন্দুস্তান হামারা হ্যায়’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। মূলত দেশভক্তির গান লেখার জন্যই পরিচিতি পেয়েছিলেন কবি প্রদীপ।
নিজের কলমের জোরে দেশে ইংরেজ রাজত্বের মূলে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছিলেন কবি প্রদীপ। তাঁর গানের জন্য ইংরেজ সরকার তাঁর গ্রেফতারির আদেশও দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে বেশ কিছুদিন পরিচয় গোপন করেছিলেন তিনি। কিন্তু থামেনি তাঁর কলম।
শুধু ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো’ই নয়, এমন আরো বহু জনপ্রিয় গান লিখে গিয়েছেন কবি প্রদীপ। তালিকায় রয়েছে ‘কিতনা বদল গয়া ইনসান’, ‘ঝাঙ্কি হিন্দুস্তান কী’, ‘দে দি হামে আজাদি’র মতো বহু কালজয়ী গান। এই যুগেও একই রকম জনপ্রিয় তাঁয লেখা গান। উল্লেখ্য, কবি প্রদীপের জন্মবার্ষিকীতেই শেষ নিংশ্বাস ত্যাগ করেন তাঁর অমর গানের গায়িকা লতা মঙ্গেশকর।