ক্রমশ বাড়ছে দূরত্ব! এবার মুখ্যমন্ত্রীকে টুইটারে ফলো করা বন্ধ করল প্রশান্তের I-PAC

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সাথে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্ব বেড়ে যাওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। পাকাপাকি ভাবে এই বিষয়ে কিছু সামনে না এলেও এবার যে ঘটনা ঘটল তাতে এই জল্পনায় কার্যত সিলমোহর পড়েছে।

এবার টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফলো করা বন্ধ করে দিল পিকে’র সংস্থা আই-প্যাক (I-PAC)। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সংস্থা ৭৭ টি টুইটার অ্যাকাউন্ট ফলো করত। কিন্তু, হঠাৎই শুক্রবার তা কমে দাঁড়়ায় ৭৬-এ। তারপরই এই সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটার হ্যান্ডেলটিকেই আনফলো করেছে পিকে-র সংস্থা।

এদিকে, এই ঘটনার পরেই সব মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, তাহলে কি সত্যিই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে আর কাজ করতে চান না বিখ্যাত ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর? যদিও, এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কিছু জানা না গেলেও টুইটারের এই প্রসঙ্গটি সেই ঘটনারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, I-PAC-এর কর্মপদ্ধতি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দু’রকমের মতামত রয়েছে। যদিও, ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কার পর ঘুরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার বেশ কিছু সাংগঠনিক উপায় যে বিশেষ কার্যকর হয়েছিল, তা দলের অনেকেই মানেন।

কিন্তু, সমস্যা হল, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ পৌঁছেছে যে, I-PAC দলের শীর্ষনেত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে মানছে না। যার ফলে সংস্থাটির কর্মপদ্ধতি নিয়ে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের একটা বড় অংশই রুষ্ট হন। এমনকি, এতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিদের মত প্রবীণ নেতৃত্বরা অপমানিত বোধ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, বিষয়টি নেত্রীর নজরে নিয়ে আসার পাশাপাশি, প্রয়োজনে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাও জানিয়েছেন তাঁরা।

PK

স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রুষ্ট হন প্রশান্তের উপর। যার ফলে ক্রমশই I-PAC-এর সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে মুখ্যমন্ত্রীর।তবে এত দ্রুত যে উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে, তা ভাবেননি কেউই।

এদিকে, বাংলা, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে কাজ করবেন না জানিয়ে মমতাকে ইতিমধ্যেই বার্তা পাঠান পিকে। যার ফলে ক্রুদ্ধ নেত্রী “থ্যাংক ইউ” লিখে পাঠিয়ে দেন। তারপর থেকে আর প্রশান্তের’র সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। বর্তমানে দলীয় কাজকর্ম সাংগঠনিক নেতাদের দিয়েই করাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে, শুক্রবারই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা মমতাকে টুইটারে আনফলো করে দূরত্ব বাড়ার জল্পনা জিইয়ে রাখল।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর