বাংলাহান্ট ডেস্ক : বহু বিতর্ক এবং জলঘোলার পর রাজ্যে চারটি পুরনিগমের ভোট আজ। বিধাননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি এবং চন্দননগর এই চারটি পুরনিগমে সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয়ে গেছে ভোট গ্রহণ। ২০১৫ এর অশান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশি নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনিতেই ভোটগ্রহণ চলছে বিধাননগরে। কিন্তু তার মধ্যেই সামনে এল একাধিক অভিযোগ।বিধাননগর পুরনিগমের ৪১ টি ওয়ার্ডে চলছে ভোট গ্রহণ পর্ব। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার পুলিশ কর্মী। নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ইস্টার্ণ ফ্রন্টিয়ার রাইফেল(EFR) এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের(STF) মতন বিশেষ পুলিশ বাহিনীও। যা কিনা কার্যতই এই প্রথম। বিধাননগর পুরনিগমে নির্বাচনের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিং এর উপর।
কিন্তু এরই এই বজ্র আঁটুনি সত্ত্বেও ভুয়ো ভোটার এবং ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল বিধাননগরে। অভিযোগ বুথের ভিতরে ঢুকে কেউ বা কারা ভোটারদের ১ নম্বর বোতাম টিপে ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করছে। এই অভিযোগে দশদ্রোণ অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরব হন এক ভোটার। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫১ থেকে ৫৫ অবধি ৫ টি বুথ রয়েছে। অভিযোগ উঠছে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ব্যানার লাগানো টোটো একেবারে ঢুকে পড়ছে বুথের সামনেই। ওই স্কুল চত্ত্বরে রয়েছে একাধিক জমায়েতও। ভোটার ছাড়াও একাধিক বহিরাগত ব্যক্তি ওই বুথ চত্ত্বরে রয়েছেন বলেই জানা যাচ্ছে। যদিও এই ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি প্রিসাইডিং অফিসার। তাঁকে এই অভিযোগের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস কর হলে ব্যাপারটি একেবারেই এড়িয়া যান তিনি।
অন্যদিকে বিধাননগরেরই অন্য একটি ওয়ার্ডে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ আনল বিজেপি। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানার অভিযোগ, বিএসএফ কমিউনিটি সেন্টারের ভোটের লাইনে সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে দেখে প্রশ্ন করেন তিনি। কিন্তু জবাবে অসঙ্গতিপূর্ণ উত্তর মেলে। বাবার নামও ঠিক মত বলতে পারেননি অভিযুক্ত ব্যক্তি। এরপরই ওখান থেকে পালিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁকে। এই ঘটনার পর ভুয়ো ভোটারের অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। তাদের অভিযোগ এমন আরও একাধিক ভুয়ো ভোটার ছড়িয়ে রয়েছে লাইনে।
ভোটের আগের রাতে বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে ভাঙচুরেরও অভিযোগ উঠেছে। জানা যাচ্ছে বিধাননগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সাধনা ঢালির বাড়িতে একাধিকবার হামলা চলে শুক্রবার রাতে। ভাঙচুর করা হয় বাড়ির এবং জানলার কাচ। দুটি ঘটনাতেই স্বভাবতই অভিযোগের তীর তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
চারটি পুরনিগমের ভোটে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ পেরিয়ে যাতে মাছিও না গলতে পারে সেই ব্যবস্থাই করেছে রাজ্যসরকার। এই চার পুরনিগমে মোতায়েন করা হয়েছে মোট ৯০০০ পুলিশ বাহিনী। এঁদের মধ্যে সাড়ে ৮ হাজার পুলিশ রয়েছেন বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে। বাকি ৫০০ পুলিশ কুইক রেসপন্স টিম, নাকা চেকিং ইত্যাদির দায়িত্ব সামলাবেন। রাজ্যের প্রতিটি বুথেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি। প্রস্তুত রয়েছেন সমস্ত পুলিশ কমিশনারেটরাও। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে প্রকাশিত হবে পুরসভা ভোটের ফলাফল।