বাংলাহান্ট ডেস্ক : মারা গেছেন ৪ বছর আগে, কিন্তু ভোট পড়ল সেই ব্যক্তির নামে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বিধাননগর পুরনিগমের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে। আর মৃত ব্যক্তিও যে কেউ নন, বঙ্গবিভূষণ প্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়।
বিধাননগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হয় ২০১৮ সালেই। এবার তাঁর নামেই ছাপ্পা ভোট পড়ার অভিযোগ উঠল। মৃত্যুর ৪ বছর পর পুরভোটে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের এএইচ কমিউনিটি হল বুথ থেকেই ভোট পড়ল তাঁর নামে।
পুরো ঘটনাটির অভিযোগ আনেন ওই ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী বাসব বসাক। তাঁর অভিযোগ, শনিবার ভোট চলাকালীন কয়েকজন বহিরাগত ওই বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দিতে শুরু করে। সেই সময়েই সঙ্গীতশিল্পীর নামে ভোট পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের নামে ১৭৪ নম্বর সিরিয়াল নাম্বার ছিল। ২০১৮ সালে প্রয়াত ব্যক্তির নাম কীভাবে এখনও ভোটার তালিকায়?’। একই অভিযোগ এনেছেন বিধাননগর ১ নম্বর এলাকা সিপিএম কমিটির সম্পাদক বুম্বা মৈত্রও। ছাপ্পা ভোটের সময় সমস্ত সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ এনেছেন তিনি।
বুম্বা মৈত্র জানিয়েছেন, ‘ওই সময় সিরিয়াল নাম্বার ধরে ধরে ডাকা হচ্ছিল আর এক একজন ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই হঠাৎ খেয়াল করি দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের নাম ধরে ডাকা হচ্ছে। শুধু তিনিই নন, অভিজিৎ মন্ডল নামে আরও এক মৃত ব্যক্তির নামে ভোট পড়েছে’।
পুরো বিষয়টির নিন্দা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘পাড়ার দ্বিজেন কাকা আর দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের তফাৎ বোঝার ক্ষমতা তৃণমূল কর্মীদের নেই। ভাগ্য ভালো এলাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই। তাহলে তাঁর নামেও ভোট পড়ে যেত। তৃণমূল নিজেকে বাংলার সংস্কৃতির ধারক ও বাহক মনে করলেও তাদপে যে নয় তা তো বোঝাই যাচ্ছে’।
এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী মলি পাল। যদিও পুরো ব্যাপারটিকে অস্বীকার করেছেন তৃণমূল প্রার্থী বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে ভোট। এহেন ঘটনায় কার্যতই স্তম্ভিত সঙ্গীত শিল্পীর পরিবার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ট্যুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেই ট্যুইটে লেখেন, ‘আমি শোকস্তব্ধ। দ্বিজেন দা আর নেই। বাংলার সঙ্গীতজগতে ইন্দ্রপতন হল। দুঃখ প্রকাশ করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করছি। ২০১১ সালে ওঁকে আমরা বঙ্গ বিভূষণ সম্মানে ভূষিত করেছিলাম। ওঁর পরিবার এবং অনুরাগীদের সমবেদনা জানাই’।