কাজ না করতে পারলে আর ভোটে দাঁড়াব না, বিষ্ণুপুরবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞা সৌমিত্র খাঁ-র

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আর মাত্র দিনকয়েক। রাজ্যের দুয়ারে কড়া নাড়ছে পুরসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে কোমর বেঁধে প্রচারের মাঠে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। বাদ নেই বিজেপিও। বিষ্ণুপুরে শনিবার পুরভোটের প্রচার সারতে দেখা গেল সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। বিষ্ণুপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রার্থীদের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূলকে বিঁধে বিষ্ণুপুরকে দিন বদলের স্বপ্ন দেখালেন তিনি। বিজেপি জিতলে বিষ্ণুপুরই হবে বাংলার মুখ এই দাবিও করতে শোনা গেল তাঁকে।

এদিন ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার সারেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, ‘আপনারা বিষ্ণুপুরের লোকসভায় বিজেপিকে জিতিয়ে একটা বৃত্তের ৫০% সম্পুর্ণ করেছেন, বিধানসভায় বিজেপিকে জিতিয়ে দিয়ে সেই বৃত্তের ৭৫% সম্পুর্ণ করেছেন। এবার বাকি টুকুও সম্পুর্ণ করুন। পুরসভাতেও বিজেপিকে কাজ করার সুযোগ দিন। এই পৌরসভায় যদি ভালো কাজ না করতে পারি ২০২৪ এর নির্বাচনে আর ভোট চাইতে আসব না। আমি নিজেও আর ভোটে দাঁড়াব না।’

   

নিজের তৃণমূল ত্যাগের প্রসঙ্গও টানতে দেখা যায় তাঁকে। তৃণমূলকে বিঁধে সৌমিত্রর কটাক্ষ, ‘আমাকে ভেবেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকর বানাবে। আমি লাথি মেরে চলে এসেছি। আমার ভরসা ছিল বাঁকুড়ার মানুষের উপর। তাই ওদেরকে থু করে চলে এসেছিলাম।’ একই সঙ্গে শাসকদলের আয়ত্তাধীন পুলিশদেরও সমালোচনা করেন তিনি। ‘পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ মা বোনকে বিক্রি করে দিয়েছে। নিজেদের পুলিশ সমাজকে ছোটো করে করছে। ৫০ হাজার টাকা আর ৫ টা মদের বোতল নিয়ে পুরভোট জেতাতে পারবে না পুলিশ।’ এমনটা বলেই হুঙ্কার ছাড়তে দেখা যায় তাঁকে।

তাঁর অভিযোগ, এতদিন ধরে বিষ্ণুপুরের উন্নতিতে কোনো কাজই করেনি তৃণমূল। স্থানীয় নেতা তন্ময় ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে তীব্র নিন্দাও জানান সৌমিত্র। তাঁর দাবি বিজেপির টিকিটে জিতলেও নিজের ব্যাবসা বাঁচাতে তৃণমূলে ফিরেছেন তন্ময় ঘোষ। সেই প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেই বিষ্ণুপুরকে বাংলার মুখ বানানোর কথাও বলতে শোনা যায় বিষ্ণুপুরের সাংসদকে। তিনি জানিয়েছেন, ‘ক্ষমতায় আসার ৬ মাসের মধ্যে বিষ্ণুপুরকে হেরিটেজ সিটি বানাবো। মল্লরাজার রাজধানীর পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনব। বিষ্ণুপুরই হবে বাংলার মুখ। ২৭ তারিখ আমার মৃত্যুও হতে পারে কিন্তু বিষ্ণুপুরের স্বার্থে বিষ্ণুপুরের মানুষের জন্য বুথগুলি দখল করব আমি।’ এদিন বিষ্ণুপুরে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষও।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার সৌমিত্রর প্রচার নজর কেড়েছিল। টোটোতে করে প্রচার সারা কালিন প্রার্থীকে টোটোর যাত্রী করে চালকের আসনে বসতে দেখা যায় সাংসদকে। সেই প্রচারে সোনামুখিতে বিজেপির ভিত আরও শক্ত করতে কার্যতই তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতাদের দলে যোগ দিতে আহ্বান জানান তিনি।

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ভোট। হাড্ডাহাড্ডি জমে উঠেছে লড়াই। যুদ্ধকালীন তৎপরতা রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে। শেষ মুহুর্তে মানুষের মন জেতার সুযোগ ছাড়তে চাইছেন না কোনো নেতাই। কী হবে বাঁকুড়ায় বিজেপর ভাগ্য? সে উত্তর অবশ্য নির্বাচনের ফলাফলই দেবে।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর