বাংলাহান্ট ডেস্ক : জোড়াপায়খানা! এলাকার এহেন নামের কারণে লজ্জায় কার্যতই মাথা কাটা যাওয়ার জোগাড় এলাকাবাসীর। বন্ধুবান্ধবদের ঠাট্টা, ইয়ার্কি নিত্যসঙ্গী। কাউকে ‘পায়খানায়’ আসতে বললেও বিড়ম্বনার একশেষ। লোককে বাড়িতে ডেকে শুধু এই নামের কারণে ভুলবোঝাবুঝিতে দু এক ঘা চড় থাপ্পড় যে পড়বে না সেই গ্যারেন্টিও দিতে পারে না কেউই। তথাকথিত ‘ভদ্র’ একখানি পাড়ার এমন একখানি ‘অভদ্র’ নামে লোকসমাজে ঠিকানা বলতেও আপদ বাসিন্দাদের। কিন্তু শেষ মেষ আর সহ্য করতে না পেরে অবশেষে নাম বদলের আর্জি নিয়ে সিধা কাউন্সিলরের দ্বারস্থ হলেন জোড়াপায়খানার এক বাসিন্দা। যা কিনা জোড়াপায়খানার ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমই।
পুরনির্বাচনের ফলাফলের আগেই ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ওই ব্যক্তি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘কাল আমার ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হিসেবে যিনিই নির্বাচিত হন না কেন, তাঁর কাছে করজোড়ে অনুরোধ। আমার পাড়ার বিষখ্যাত নামের মোড় তথা ‘জোড়া পায়খানার মোড়’-এর নাম বদলে অন্য কিছু করে দিন প্লিজ। সেই জোড়াপায়খানা আর নেই, তাই নামটা থাকার আর যুক্তি নেই। এই নামের জন্য বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে ডাকতে গেলে প্রচণ্ড embarrassed হতে হয়।’ তাঁর এহেন পোস্টের পরই রীতিমতো হাসির রোল ওঠে নেটপাড়ায়। যথারীতি পাড়ার নাম শুনে হেসে কুটোকুটি খান মানুষজন। একই সঙ্গে কমেন্ট বক্সে জমতে বিভিন্ন মজার কমেন্ট।
কমেন্টবক্সে নতুন নামের জন্যও একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন নেট পাড়ার বাসিন্দারা। এই ব্যাপারে নাম বদলে ওস্তাদ যোগী আদিত্যনাথের সাহায্য চাওয়ার কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
জোড়াপায়খানা মোড়টি কামারহাটি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এলাকার স্থানীয় একটি ল্যান্ডমার্ক এটি। ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত কাউন্সিলর লক্ষ্মী বিশ্বাস ব্যাপারটি সম্পর্কে কার্যতই আকাশ থেকে পড়ে জানিয়েছেন, ‘ওভাবে কোনও এলাকার নাম বদলানো যায় না। সেটা আমার হাতেও নেই। যিনি বা যাঁরা এই আবেদন করছেন আমার সঙ্গে দেখা করুন। আমি কথা বলে আর্জি পৌঁছে দেব পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে।’
শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই নয়, বাম জমানা থেকেই ওই এলাকার নাম বদলের দাবি উঠে আসছিল। তৃণমূল আমলেও সেই দাবি ওঠে, তবে তাতে আমল দেয়নি প্রশাসন। এবার কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের নজরে বিষয়টি পড়েছে। আর এবার তিনি সেই মোড়ের নাম বদলানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। জানা যাচ্ছে যে, ওই মোড়ের নতুন নাম হবে শিশু শিল্পী নারায়ণ দেবনাথ-র নামানুসারে। শুক্রবার ওই এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেখানকার নাম ‘নারায়ণ দেবনাথ মোড়” করার কথা জানিয়েছেন মদন মিত্র।