বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের পক্ষ থেকে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে “ভুলবশত” পাকিস্তানে অবতরণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ঘিরে ক্রমশ উত্তেজনার পারদ চড়ছে। গত শনিবার ভারত সরকার এই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করতে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এখন পাকিস্তান সেই ব্যাখ্যা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি, সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এই পুরো বিষয়টির যৌথ তদন্ত হওয়া উচিত।
এছাড়াও, ভারত থেকে ঠিক কোন ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল, এবং সেটির স্পেসিফিকেশনই বা কি ছিল সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্যের দাবি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের গুরুতর বিষয়কে শুধু সহজ ব্যাখ্যা দিয়ে শেষ করা যাবে না। ভারত যে অভ্যন্তরীণ তদন্তের কথা বলছে তাও যথেষ্ট নয় কারণ ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানে পড়েছে। এমতাবস্থায় যৌথ তদন্ত দাবি করা হচ্ছে যাতে প্রতিটি ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা যায়।
পাশাপাশি, পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে, ভুল বোঝাবুঝিতে আত্মরক্ষার জন্য অন্য দিক থেকেও প্রতিশোধ নেওয়া যেতে পারে! এমন পরিস্থিতিতে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। পাকিস্তান এই ইস্যুতে গোটা বিশ্বের কাছে বিষয়টি বিবেচনা করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করার আবেদনও জানিয়েছে।
এসব ছাড়াও ভারতকে দোষারোপ করতে গিয়ে পাকিস্তান বলেছে, ভারতের তরফে অস্ত্র পরিচালনায় বড় ধরনের অবহেলা হয়েছে। এমনকি, অনেক প্রযুক্তিগত ত্রুটিও দেখা গেছে। যে ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানে পড়েছিল তা ঠিক কিভাবে নিক্ষেপ করা হয়েছিল তাও জানার চেষ্টা করছে পাকিস্তান।
এছাড়াও, এত বড় ঘটনার কথা ভারতের তরফে আগে কেন জানানো হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাকিস্তান এই ঘটনা সামনে আনতেই ভারত সাফাই জানিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে সে দেশের তরফে।
ইতিমধ্যেই মেজর জেনারেল বাবর ইফতেখারও এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬.৪৩ মিনিট নাগাদ পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের এয়ার ডিফেন্স অপারেশন সেন্টার [PAF] ভারতের ভূখণ্ডের ভিতরে একটি উচ্চ গতির উড়ন্ত বস্তু দেখতে পায়। তাঁর কথামতো প্রায় সাত মিনিট পর সেটি চন্নু শহরের কাছে অবতরণ করে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই ভারতের দিক থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র “দুর্ঘটনাবশত” পাকিস্তানের দিকে চলে যায়। আর তারপর থেকেই চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে এই পড়শি দেশ। যদিও, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এক বিবৃতির মাধ্যমে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে যে, “মার্চ মাসের ৯ তারিখ নিয়মমাফিক রক্ষণাবেক্ষণের সময়ে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাবশত ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানের দিকে উড়ে গিয়েছে। ভারত সরকার এই বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের একটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রটি অবতরণ করেছে। এই ঘটনা অত্যন্ত অনুশোচনীয়। তবে, সৌভাগ্যবশত, এই দুর্ঘটনার ফলে কোনো প্রাণহানি হয়নি।”