বাংলাহান্ট ডেস্ক : তৃণমূল আমলে ভাঙড় বলতেই একপ্রকার বোঝায় আরাবুল ইসলাম এবং কাইজার আহমেদকে। এই দুজনের দ্বন্দ্ব কার্যতই সুবিদিত। প্রায়শই সামনে আসে দুই তৃণমূল নেতার মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দের খবর। এবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে আবারও এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ভাঙড়ের বাতাস। সম্প্রতি একটি সমাবেশ থেকে কাইজার তোপ দাগেন যে এলাকার ৫০% পঞ্চায়েত সদস্যই দুর্নীতিবাজ। অবিলম্বে তাঁদের অপসারণের দাবিও তোলেন তিনি। প্রকাশ্যে তৃণমূল নেতাদের প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্যে কার্যতই চরম অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির।
সম্প্রতি ভাঙড়ের কারবালা ময়দানে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের জনসভায় দেখা মেলেনি আরাবুল ইসলাম এবং তাঁর অনুগামীদের। আরাবুল বিরোধী কাইজার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মিজানুর আলম, মহসিন গাজি ও তাঁদের অনুগামীরাই উপস্থিত ছিলেন এই সমাবেশটিতে। সেখানেই একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করতে শোনা যায় ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের তিনটি অঞ্চলের সভাপতি কাইজার আহমেদকে। তিনি বলেন, ‘ভাঙড় ২ ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের ৫০% সদস্য, প্রধানরা দূর্নীতিগ্রস্ত। তাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্প, আবাস যোজনা, আমফানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সন্ধ্যা হলেই নিউটাউনে যান তাঁরা। আর সাধারণ মানুষের টাকায় আমোদ করেন।’
কাইজার আহমেদের এহেন মন্তব্যের পর কার্যতই উত্তাল ভাঙড়ের রাজনৈতিক আবহাওয়া। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাঠে নেমেছেন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের নেতা আরাবুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ এবং অনুগামীরা। সাউথ সিটি প্রকল্পের তোলাবাজি থেকে শুরু করে বিধানসভা ভোটের আগে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে সঙ্গে গোপন যোগাযোগ সব কিছু নিয়েই স্যোশাল মিডিয়ায় সোচ্চার তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে আরাবুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙড় ২ ব্লকে কোনও সভাপতি নেই। সেটা না করে বাইরের একটা লোককে চেয়ারম্যান করে দিল। সেই লোক বিশেষ একটা গোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে ওঠাবসা করছেন। ভাঙড়ের সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করছেন।’
ভাঙড়ে শাসক দলের এহেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কার্যতই তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, বরাবই রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে থাকে ভাঙড়। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের অন্দরে এহেন গোষ্ঠীদ্বন্দের সুযোগ যে নেবেই বিরোধীরা, একথা অনুমান করে খানিক অস্বস্তিতেই তৃনমুল কংগ্রেস।