বাংলাহান্ট ডেস্ক : শুক্রবার আমতা গিয়েও ফিরতে হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ এবং গো ব্যাক স্লোগানের মুখে পড়ে মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি তিনি। আর তাতেই বেজায় চটেছেন মন্ত্রীমশাই। শনিবার তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। আর সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেও আবার নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জলঘোলা হওয়া।
শুক্রবার আনিসের মৃত্যুর ৪২ তম দিনে আমতায় একটি ধর্মীয় শোকসভার আয়োজন করেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। সেখানেই যোগ দিতে যান ফিরহাদ হাকিম এবং পুলক রায়। আমতায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল জনরোষের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মুহুর্তেই বদলে যায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের চেহারা। রণক্ষেত্রের আকার নেয় এলাকা। এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হতেই অবস্থা বেগতিক বুঝে মন্ত্রীকে নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলেন তাঁর নিরাপত্তা কর্মীরা। এরপর সেখানে আর দাঁড়াননি ফিরহাদ হাকিম। উলটো পথে হেঁটে গাড়িতে উঠে যান তিনি। তড়িঘড়ি ঘুরিয়ে নেওয়া হয় গাড়িও।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান যে কেউ সেই অনুষ্ঠানে ডাকেনি তাঁকে। তাই ঢুকতে দেওয়া হবে না ফিরহাদ হাকিমকে। এই প্রসঙ্গেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ববি। তাঁর কথায়, ‘আবাস সিদ্দিকির মিটিং থেকে দু চারটে চ্যাংড়া ছেলে ফিরছিল। তারাই ওখানে হইহই করছিল।’ এর সঙ্গে আরও যোগ করেন তিনি। বলেন, ‘আমি মাঝে মাঝে ন্যাশানাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল দেখি। সেখানে দেখি অনেক সময় জঙ্গলে বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার পাশে কুকুর বা হায়নার দল তাকে দেখে চিৎকার করছে। তার মানে এই নয় যে বাঘ ভয় পেয়ে গিয়েছে। বাঘ তাদের কিছু বলছে না মানে তাদের ইগনোর করছে। আমিও ওদের ইগনোরই করেছি।’
একই সঙ্গে আনিসের বাবার ‘টাকা দিয়ে কিনতে’ আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ কাউকে টাকা দিয়ে কিনতে আসে না। আর আইনে এভাবে কেনাও যায় না। দোষ যাদের প্রমাণিত হবে শাস্তি হবে। সরকারের দায়িত্ব পাশে থাকা, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে থাকতে চেয়েছেন।’
তাঁর এহেন মন্তব্যকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে চরম বিতর্ক। বিরোধী মহলের একাংশের দাবি, গ্রামবাসীদেরই কুকুর এবং হায়না বলে অপমান করেছেন ববি। এই প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এটা একটা ক্রোনোলজি। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন ভাষার ঐতিহ্য রয়েছে৷ সেই উত্তরাধিকারই বহন করছেন ববি। এর আগেও সরকার ডি এ প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের উদ্দ্যেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন বেশি ঘেউঘেউ করবেন না। তারপর বলেছিলেন হাতি চলে বাজার কুত্তা ভোঁকে হাজার। সংখ্যালঘুদের অপমান করেও দুধেল গাই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁরই মন্ত্রী গরীব গ্রামবাসীদের কুকুর,হায়না বললেন।’