বাংলাহান্ট ডেস্ক : খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি! বাংলার ক্রেতা সুরক্ষা মেলার ৩ দিনের বরাদ্দ অর্থের পরিসংখ্যান দেখে এমনটা বললেও খুব একটা ভুল হয় না বোধহয়। ঋণের সমুদ্রে গলা অবধি ডুবে রাজ্য। টাকার অভাবে থমকে একাধিক সরকারি প্রকল্প। পেনশন পাচ্ছেন না অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা। তার মধ্যে রাজ্য সরকারের ৩ দিনের একটি মেলার মোট খরচ ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকারও বেশ কিছুটা বেশি। যা দেখে কার্যতই চোখ কপালে রাজ্যবাসীর। একই সঙ্গে এহেন খরচের জেরে সমালোচনার ঝড় বিভিন্ন মহলে।
২৫ মার্চ থেকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম চলছে ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মেলা। ৩ দিন ব্যাপি এই মেলায় বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও। শুধু মাত্র চা জলখাবারের জন্য বরাদ্দ ১২ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিতে খরচ ৭৫ লক্ষ টাকা। টিভিতে বিজ্ঞাপনে খরচ ৮ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়াও চেয়ার, টেবিল, হোডিং, ব্যানার, বিদ্যুৎ ইত্যাদির পিছনে খরচ ৫০ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। এছাড়াও পুরো মেলাটি সঞ্চালনার জন্য খরচ ৯ লক্ষ টাকা। উপহার স্বরূপ খরচ ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৩ দিনের মেলায় মোট খরচের পরিমাণ ১ কোটি ৫৮ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭০০ টাকা।
চলতি বছরের বাজেট পেশ করে রাজ্যের আর্থিক টানাপোড়েনের কথা ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন যে আয় বুঝেই ব্যয় করতে হবে রাজ্যকে। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই মেলাটির জন্য খরচ হয়েছিল মাত্র ১১ লক্ষ টাকা। মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচ কিছুটা বাড়তেই পারে কিন্তু সেখানে এই কয়েক বছরে এই খরচ ১০ গুন বেড়ে গেল কীভাবে, এবং খরচ এই পরিমাণ বাড়তে দেখেও কেন তা কাটছাঁট করল না উক্ত দপ্তর তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া পুরো ব্যাপারটির বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘এই মেলাতে প্রচুর অতিথি আসেন।বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন তাঁরা। তাঁদের আমরা নিজেদের কাছে নিয়ে এসে বসাই। চা-কফি থেকে সমস্ত পানীয় থাকে। উপহার দেওয়া হয় তাঁদের। এই বিষয়ে এর থেকে বেশি কোনও মন্তব্য করতে পারব না।যে অফিসাররা এত বছর ধরে মেলা করছেন তাঁরা ভালো বলতে পারবেন।’ ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের এই মেলাতে অনেক মানুষকে সতর্ক করা যায়, কিন্তু রাজ্যের ভাঁড়ে মা ভবানী পরিস্থিতিতে কতখানি প্রাসঙ্গিক মেলা পার্বণের পিছনে এই বিপুল পরিমাণ খরচ? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য নেই কারও কাছেই।