বাংলাহান্ট ডেস্ক : গরু পাচার মামলায় সিবিআই একাধিকবার তলব করেছে অনুব্রত মণ্ডলকে। প্রতিবারই তলব এড়াতে হয় অজুহাত নাহয় আইনি পথেই হেঁটেছেন তিনি। কিন্তু গতকালই কলকাতা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেয়েছেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা। সিবিআই তদন্ত এড়াতে তাঁর রক্ষাকবচের আর্জি খারিজ করেছে আদালত। আর তার পরই তাঁর মঙ্গল কামনায় মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হল দলের বিধায়ক এবং নেতৃত্বের তরফে৷ তারাপীঠের ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়, হাসনের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক ত্রিদীপ ভট্টাচার্যের উদ্যোগেই এই মহাযজ্ঞের আয়োজন হল তারাপীঠ মন্দিরে।
তাঁর মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করা হলেও তাতে অবশ্য উপস্থিত থাকতে পারেননি অনুব্রত নিজে। আপাতত আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রচারে সেখানেই রয়েছেন তিনি। তবে এই যজ্ঞ নিয়ে টিপ্পনি কাটতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। তাদের দাবি, আদালতে হালে পানি না পেয়ে শেষমেষ মায়ের চরণেরই দ্বারস্থ হয়েছেন অনুব্রত। যদিও ঠিক কী উদ্দ্যেশ্যে এই যজ্ঞ তা নিয়ে মোটেই মুখ খুলতে চাননি উদ্যোক্তা নেতারা।
মাস খানেক আগেও তারাপীঠে যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। সেবার গরুপাচার মামলায় তাঁকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল আদালত। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তারি এড়ানোর রক্ষাকবচ পাওয়ার পরের দিনই ধুমধাম করে যজ্ঞের আয়োজন করেন তৃণমূল নেতা। একই সঙ্গে চলে ভোগ নিবেদন এবং দরিদ্র সেবা।
তবে সেবারের সেই স্বস্তির আবহ এবার আর নেই। আদালতে খারিজ হয়েছে রক্ষাকবচের আবেদন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে এখন কঠিন পদক্ষেপ নিতেই পারে সিবিআই। এই মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কেই বহাল রেখেছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল তলব করলে আর তা এড়ানোর কোনও উপায়ই রইল না অনুব্রতর কাছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে নোটিশ ধরায় সিবিআই। ১৫ মার্চ তাঁকে সিবিআইয়ের দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু নিজাম প্যালেসের বদলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূল নেতা। দ্বিতীয় বারের জন্য রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতে মামলা করেন তিনি। কিন্তু গত ১১ মার্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গেল বেঞ্চ। এরপর সেই রায়ই অব্যাহত রাখল ডিভিশন বেঞ্চও। আদালতের এই রায় যে অতি মাত্রায় তাৎপর্যপূর্ণ তা বলাই বাহুল্য।