বাংলাহান্ট ডেস্ক: আজ থেকেই রাজ্যে শুরু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। গত ২ বছর রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিক ভাবে হতে পারেনি মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। চলতি বছরে বেশ নিম্নগামী করোনা গ্রাফ। ফলে এবার রীতি মেনেই হবে উচ্চমাধ্যমিক। যদিও নিজেদের স্কুলে বসেই পরীক্ষা দেবে ছাত্রছাত্রীরা। আগের মতন অন্যস্কুলে যেতে হচ্ছে না তাদের। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, প্রায় ৮ লক্ষ ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে এবার। আজ থেকেই শুরু হয়ে আগামী ২৬ তারিখ অবধি চলবে রাজ্যের এই পরীক্ষা। সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষক শেষ হবে ১:১৫ মিনিটে।
মাধ্যমিকের মতন যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষারও নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিয়ে যে তৎপর সরকার তা বলাই বাহুল্য। অন্যদিকে কোভিড বিধি মেনে হোম সেন্টারেই পরীক্ষা দেওয়ায় কি অতিরিক্ত বাড়তি সুবিধা পাবেন পড়ুয়ারা, তাই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে স্বচ্ছ করতে মাধ্যমিকের মতই একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। পরীক্ষার হলে নকল করা ধরা পড়লে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষাটিই শুধু নয়, বাতিল করা হতে পারে স্কুলের অনুমোদনও। শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘যে কোনও স্কুলের যে কোনও শিক্ষক শিক্ষিকারই নৈতিক দায়িত্ববোধ রয়েছে। সেক্ষেত্রে গণ টোকাটুকিতে কোনও শিক্ষক যদি অনুমতি দেন তাহলে আমার মনে হয় শিক্ষকরাই নিজেদের সস্তা করে ফেলবেন ছাত্রছাত্রীদের কাছে।’ এই প্রসঙ্গে এক শিক্ষক জানিয়েছেন, ‘স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা ঠিক যতটা কড়া ভাবে হয় উচ্চমাধ্যমিকও ততটাই কড়া ভাবে নেওয়া হবে। লাগামছাড়া হয়ে গেলে নিজেদের সম্মান নিয়েই ছেলেখেলা করা হবে।’
যেহেতু পড়ুয়াদের নিজেদের স্কুলে নিজেদের শিক্ষক শিক্ষিকাদের তত্ত্বাবধানেই পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাই সেই পরীক্ষা কতখানি স্বচ্ছ হবে তা নিয়ে শোরগোল বিভিন্ন মহলে। পড়ুয়াদের একাংশের অবশ্য দাবি, চেনা শিক্ষক শিক্ষিকারা দায়িত্বে থাকায় বেশ কিছুটা সুবিধাই হবে। কারণ নিজেদের স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তাঁদের কিছুটা হলেও সাহায্য করবেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। অন্যদিকে অপর আর একদলের কথায়, ‘স্কুলের একটা সম্মান আছে। মনে হয় না শিক্ষক শিক্ষিকারা কোনও রকম সাহায্য করবেন। হোম সেন্টারে পরীক্ষা হচ্ছে বলে সেই অর্থে কোনও অতিরিক্ত সুযোগ পাওয়া যাবে না বলেই আশা করছি।’
উল্লেখ্য, এববছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে ৭ লক্ষ ৪৫ হাজার ছাত্রছাত্রী। ৫৬ টি বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। বাংলা, ইংরাজি, হিন্দি, অলচিকি এই চারটি ভাষায় তৈরি হয়েছে প্রশ্নপত্র। একই সঙ্গে কড়াকড়ি করা হয়েছে নিরাপত্তাতেও। পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। মাধ্যমিকের মতই বেশ কিছু এলাকাতে বন্ধ হচ্ছে ইন্টারনেট পরিষেবা। অভিভাবকরা ঢুকতে পারবেন না পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে। একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের থাকতে হবে তাঁদের। একই সঙ্গে এই সমস্ত কিছুর দিকেই কড়া নজর রাখবেন পর্যবেক্ষকরা। উচ্চমাধ্যমিক সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার সমাধানে হেল্প লাইনও খুলেছে সরকার।