বাংলাহান্ট ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরেই চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অবস্থা এতটাই খারাপ যে কর্মচারীদের পেনশন অবধি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না সরকারের পক্ষে। প্রতি মাসে বেড়েই চলেছে কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা। তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে নতুন রাস্তা, হাসপাতাল, স্কুল তৈরির জন্য কোনও রকম টাকা নেই সরকারের হাতে। এই মুহুর্তে শুধুমাত্র চলতি প্রকল্পগুলোকে শেষ করার দিকেই নজর দিচ্ছে সরকার।
এরই মধ্যে গত ২৮ মার্চ বিধানসভায় রাজ্য সরকারের তরফে পেশ করা হয়েছে কন্ট্রোলার এবং অডিট জেনারেলের রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে কেন্দ্রের এই সংস্থা স্পষ্টতই জানিয়েছে সরকারের দেউলিয়া হতে আর খুব বেশি দেরি নেই। রিপোর্ট বলছে সরকারের যেটুকু খরচ না করলেও নয় সেই আবশ্যিক খরচেরও ৫৮.৮৩% এসেছে ধার করা টাকা থেকেই। এই আবশ্যিক খরচ বলতে কর্মচারীদের পেনশন, ভাতা, হাসপাতালের খরচ গুলি সাধারণত করের টাকাতেই চালানো উচিত রাজ্যের। ওই সংস্থার দাবি, পশ্চিমবঙ্গের এখন এমনই অবস্থা আগামী দিনে শুধুমাত্র ধার মেটানোর জন্যই ধার করতে হবে রাজ্যকে।
অন্যদিকে এই সংস্থার রিপোর্ট পেশ হয়েছে মোদীর রাজ্য গুজরাটেও। সেই রাজ্যে এই রিপোর্টে সিএজি জানিয়েছে ঋণ শোধে অতি সুচিন্তিত পথ না নিলে অতি দ্রুতই চরম বিপর্যয় আসন্ন গুজরাটেও। তারা জানিয়েছে আগামী ৭ বছরে সরকারের মোট ঋণের ৬১% ফেরত দিতেই হবে সরকারকে। নতুন করে ঋণ নেওয়ার আগে এটা যেন মনে রাখে গুজরাট সরকার। গুজরাট সরকার অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলির পিছনে বিপুল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে কার্যতই নষ্ট করেছে বলেও জানিয়েছে সিএজি।
এহেন অবস্থায় দাঁড়িয়ে বাংলার অর্থনীতির এই হাল নিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শিবিরের সোচ্চার হওয়ার বড় জায়গা থাকলেও গুজরাটে ওই রিপোর্টের পর তাদের বাংলা নিয়ে মুখ খোলার খুব একটা সুযোগ আর থাকছে না বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন কোমড় ভাঙা অর্থনীতিকে সোজা করতে কী পদক্ষেপ নেয় মমতার সরকার, সেটাই দেখার।