বাংলা হান্ট ডেস্ক: ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী রান্নার গ্যাসের দামের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের উজ্জ্বলা যোজনার সাফল্য নিয়ে এবার তুমুলভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকি, দেশজুড়ে এমন খবর আসছে যে উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগীরা ঘরোয়া গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে নতুন করে সিলিন্ডার ভর্তি করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়াও, গ্রামাঞ্চলে আবারও প্রচলিত জ্বালানি দিয়ে রান্না শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলার বিসরামপুর ব্লকে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার প্রায় ১৩ হাজার সুবিধাভোগী রয়েছেন। কিন্তু, এখন তাঁদের বেশিরভাগই এই স্কিমে পাওয়া গ্যাস সিলিন্ডারগুলি ভর্তি করা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর মূল কারণ অবশ্যই গ্যাসের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়া। বর্তমানে বিসরামপুরে ঘরোয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারের দাম পৌঁছেছে ১০০৭ টাকায়।
গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে সমস্যায় সাধারণ মানুষ:
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইচপি গ্যাস ডিলার দয়াশঙ্কর দুবে জানিয়েছেন যে, গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে তাঁদের ব্যবসা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া কার্যত কঠিন হয়ে উঠেছে। এমনকি, কর্মচারীদের বেতন দেওয়াও তাঁদের পক্ষে ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে তাঁদের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুল্লিও বিক্রি করেছেন। এছাড়াও, কদর গ্রামের উজ্জ্বলা সুবিধাভোগী সঙ্গীতা দেবী বলেন, গ্যাসের দাম এত বেড়ে গেছে যে তাঁদের পক্ষে গ্যাস সিলিন্ডার পুনরায় ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
শহরাঞ্চলের অবস্থাও ভালো নয়:
পালামৌ জেলায় উজ্জ্বলা প্রকল্পের অধীনে, ২০২০ সাল পর্যন্ত ২,২০,২৩৪ জনকে গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২০ এবং ২০২১ সালে, এই প্রকল্পের অধীনে জেলায় কোনো নতুন রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। পাশাপাশি উজ্জ্বলা প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা গ্রামের পাশাপাশি শহরাঞ্চলেও ভালো নয়।
এই প্রসঙ্গে শহুরে এলাকায় এলপিজি সিলিন্ডার বিতরণের কাজে নিযুক্ত অবধ কুমার পান্ডে বলেছেন যে, তাঁর ৪০০ জন উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগী রয়েছেন, কিন্তু এখন তাঁদের কেউই গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি করাচ্ছেন না।
তিনি বলেছেন যে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই সিলিন্ডার এবং গ্যাসের চুল্লিও বিক্রি করেছেন। অপরদিকে, হাজারীবাগে উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগীরা এখন আবার কয়লা দিয়ে রান্না শুরু করেছেন। এই প্রসঙ্গে এইচপি গ্যাস এজেন্সির অপারেটর অলোক বিহারী দীক্ষিত বলেছেন যে, তাঁর ৬,৩০০ টি উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ রয়েছে। কিন্তু, এখন তাঁদের প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাস ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছেন।