বাংলাহান্ট ডেস্ক : সম্প্রতি তৃণমূল (All India Trinamool Congress) নেতাদের প্রাসাদোপম অট্টালিকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চর্চা। আর সেইরকমই একটি ‘বাড়াবাড়ি’ হল দক্ষিণ দমদমের দাগা কলোনির দেবান্তরা। তিনতলা একটি শ্বেতশুভ্র বাড়ি, ঠিক মাঝখানে বসে একটি নারী মূর্তি। বিরোধী মহলের দাবি, বাড়িটি তৈরি করতে নয় নয় করে হলেও খরচ পড়েছে ১০ কোটি টাকা। বাড়ির মালিক একজন কাউন্সিলর হওয় সত্ত্বেও ওত বিপুল খরচ করে অত বড় বাড়ি কীভাব্র বানালেন তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন যাবৎ তৃণমূলের হয়ে লড়ে এলেও চলতি বছরে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। ফলে নির্দল থেকেই ভোটে লড়েন তিনি। সূত্রের খবর, ব্রাত্য বসু ঘনিষ্ঠ দাপুটে এই নেতা এককালে পেট চালাতে ট্যাক্সি চালিয়েছেন। তখন কংগ্রেস করলেও তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই সঙ্গী তিনি। ২০১৫ সালে প্রথম দক্ষিন দমদমের কাউন্সিলর হয়ে পৌরপ্রধান পারিষদ হন দেবাশীষ। কিন্তু ৬ বছরে কয়েকশো কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগে এবার তাঁকে বহিষ্কার করে দল। মেলেনি টিকিটও। তার পরই নির্দল টিকিটে লড়েন তিনি।
ঠিক কী কী সম্পত্তির মালিক দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়? জানা যাচ্ছে শুধু দেবান্তরাই নয়, নোলক নামে আরও একটি পাঁচতলা বিলাসবহুল বাড়িও রয়েছে তাঁর। বিরোধীদের দাবি, এই বাড়িগুলির কোনওটিই সৎপথে তৈরি নয়। বরং ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে জোর করে বেআইনি জমি লিখিয়ে নিয়ে সেই জমিতেই তৈরি হয়েছে বাড়ি। এখানেই শেষ নয়, শান্তিনিকেতনেও নাকি একাধিক বাগানবাড়ি রয়েছে প্রাক্তন এই তৃণমূল নেতার। মল রোডেও রয়েছে ঝাঁ চকচকে আর একটি বাড়ি। কত টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তাঁর? পুরভোটের হলফনামায় সম্পত্তির খতিয়ানে দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন গত অর্থবর্ষে তাঁর আয় ১৫ লক্ষ টাকা। ব্যাঙ্কে রয়েছে ২ কোটি টাকারও বেশি। স্থাবর সম্পত্তিও এক কোটির অনেকটাই বেশি।
কিন্তু এই বাড়ি ঘটিত অভিযোগ প্রসঙ্গে কী জানিয়েছেন কাউন্সিলর? তিনি বলেন, ‘দুই কাঠারও কম জমিতে আমার বাড়িটি তৈরি হয়েছে। এই জমিটি আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া। দক্ষিণ দমদম পুরসভায় আমার সমস্ত কিছুর রেকর্ড রয়েছে। আমার বাড়ি ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে করা। এখনও শোধও করে উঠতে পারিনি। অসৎ কাজ করিনি বলেই ৯৪% ভোট পেয়ে এবারও কাউন্সিলর হয়েছি।’ বাকি সমস্ত অভিযোগকে বিরোধীদের চক্রান্ত বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।