‘ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে রাজি”, পোস্টার হাতে ফেসবুকে পোস্ট যুবকের! হলেন কটাক্ষের শিকার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সমগ্র বিশ্বেই বেড়ে চলেছে অপরাধের সংখ্যা। যেগুলির মধ্যে অন্যতম হল ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অপরাধ। তবে, বিশ্বের পাশাপাশি, আমাদের দেশেও ক্রমশ বাড়ছে ধর্ষণের সংখ্যা। নারী সুরক্ষা ও নারী নিরাপত্তার মত একাধিক কর্মসূচি ও ভাবনার রেশ দেশজুড়ে ছড়ানো হলেও কিছুতেই কমছেনা এই নিন্দনীয় ঘটনা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো আবার প্রমাণ লোপাটের জেরে ঘটানো হয় প্রাণহানিও।

যদিও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর লোকলজ্জা এবং সমাজের ভয় মুখই খুলতে পারেন না ধর্ষিতারা। বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এলেও রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। এমনকি, প্রায় সকলেই বাঁকা চোখে তাকান নির্যাতিতাদের দিকে। আর ক্রমশ এই আঘাত এবং অপমান সহ্য করতে করতে জন্ম নেয় গভীর হতাশার। যার ফলে জীবনকে বহন করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। এক কথায় তাঁদেরকে ঘিরে ধরে রাশি রাশি নেতিবাচকতা। এমনকি, একটা সময়ে আত্মহননের পথও বেছে নিয়ে নিজেকে শেষ করে দেন তাঁরা।

বহুদিন ধরেই এইরকম হাজারও ঘটনার খবর সামনে আসে। যেখানে শুধুমাত্র সমাজ এবং পরিজনদের অসহযোগিতায় চলে যায় প্রাণগুলি। কিন্তু, এখন সময় পাল্টাচ্ছে। তার সাথে পাল্টাচ্ছে চিন্তাভাবনাও। সম্প্রতি সেই সমস্ত নির্যাতিতা মহিলার পাশে দাঁড়িয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করে জনৈক যুবক সদর্পে ঘোষণা করলেন তিনি ধর্ষিতাকেও বিয়ে করতে প্রস্তুত। পাশাপাশি, আত্মহননের পথ বেছে না নেওয়ার আর্জিও জানালেন তিনি।

আর এই পোস্টটিই এখন তোলপাড় করছে নেটমাধ্যম। ফেসবুক পোস্টটিতে দেখা যাচ্ছে একটি পোস্টার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একজন যুবক। পাশাপাশি, সেই পোস্টারে লেখা রয়েছে বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় “আমি ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। কিন্তু দয়া করে আত্মহত্যা করবেন না।” এদিকে, এই পোস্টের পরই কমেন্টের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। আর সেখানে দেখা গিয়েছে মতামতের ভিত্তিতে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছেন তাঁরা।

অনেকে ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে চাওয়া ওই যুবকের পাশেই দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, আজও অনেকেই কোনো ধর্ষিতা বা নির্যাতিতার হাত ধরতে গেলে অনেকবার ভাবেন। এমতাবস্থায়, ওই যুবক সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে রেখে যেভাবে খোলা মনে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে, অনেকেই আবার যুবকের এই পোস্টের তীব্র সমালোচনাও করেছেন।

কিছু কিছু নেটাগরিক জানিয়েছেন, ধর্ষিতাদের পাশে দাঁড়াতে হয় মানসিকভাবে। শুধু বিয়ে করলেই সব সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া যায় না। আবার কেউ বলেছেন, বিয়ে করেনি বলেই কি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ধর্ষিতারা? এটা খুবই নিম্ন চিন্তাভাবনা। বিয়ের মাধ্যমেই সব হয় না। আবার অনেকে বলতে চেয়েছেন, বিয়ে করেই কেউ কাউকে উদ্ধার করে দেয় না। তবে, অধিকাংশজনই ওই যুবকের এরূপ মানসিকতায় তাঁকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর