বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রামপুরহাটে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুন এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ফলে বহু মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনায় গোটা বাংলা জুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এরপর হাইকোর্টের তরফ থেকে সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হলে তারা প্রথম পদক্ষেপেই তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে জেল হেফাজতে নেন। তবে এদিন মিহিলাল শেখ, রামপুরহাটের বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এমন এক মন্তব্য করে বসলেন, যাতে আরো একবার মাথা চড়া দিয়ে বসলো বগটুই-বিতর্ক।
বলে রাখা ভালো, বগটুই অগ্নিকাণ্ডে নিহত পরিবারের এক আত্মীয় হলেন এই মিহিলাল শেখ। ভয়ঙ্কর এই অগ্নিকাণ্ডের দরুন তাঁর মা, স্ত্রী, মেয়ে এবং বোন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। সেই মিহিলাল শেখ এবার তৃণমূল নেতা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বসলেন। মিহিলাল এদিন অভিযোগ করেন যে, আনারুল হোসেন ভয়ঙ্কর অগ্নি কাণ্ডের জন্য দায়ী হলেও প্রকৃতপক্ষে এর মাস্টারমাইন্ড হলেন আশিস বন্দোপাধ্যায়। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আশিসবাবু জানান যে, তিনি মিহিলাল নামের কাউকে চেনেন না।
এদিন মিহিলাল শেখ বলেন, “যারা আমার পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে মারল, তারাই এখন জেলের ভেতর বসে বিয়ার পান করছে। আমি সব কিছুই জানি কিভাবে বাইরে থেকে জেলের ভিতর খাবার পৌঁছে যাচ্ছে। আর এসবের পেছনে রয়েছেন আশিস বন্দোপাধ্যায়। আমি এতদিন ওনার বিরুদ্ধে মুখ খুলিনি কিন্তু এবার বাধ্য হলাম। আশিস আমাদের সকলের ওপর অকথ্য অত্যাচার করেন। বর্তমানে বলছেন যে উনি নাকি আমাদের চেনেন না।”
এরপর তিনি আরও বলেন, “আনারুলকে গ্রেফতার করা হলেও আশিসই ওকে গাইড করেছে। ও-ই আনারুলকে ব্লক সভাপতি পদে বহাল রাখে। আমার আবেদন এই কাণ্ডে কাউকে যেন শেষ পর্যন্ত ছাড়া না হয়।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বেই তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের মধ্যে চিঠি আদান-প্রদান নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সেই চিঠিতে অনুব্রতর কাছে পঞ্চায়েত ভোট না হওয়া পর্যন্ত আনারুলকে তৃণমূল ব্লক সভাপতি পদে বহাল রাখার জন্য আর্জি জানান আশিস বাবু। এই চিঠিটি সামনে আসার পরই অনুব্রত মণ্ডল বলেন যে, প্রথম থেকেই আনারুলকে সরানোর জন্য তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন। কিন্তু ভোটের মুখে আশিস আনারুলকে পদে বহাল রাখার আর্জি জানালে তিনি তাকে দলে রাখতে বাধ্য হন।