বাংলা হান্ট ডেস্ক: পৃথিবী রহস্যময় জিনিসে পরিপূর্ণ। আজকের আধুনিক যুগে আমরা বহুবার ভুলে যাই যে, আমাদের অস্তিত্ব আসার আগেও এই পৃথিবীতে প্রাণ ছিল এবং আমাদের চলে যাওয়ার কয়েক মিলিয়ন বছর পরেও এখানে প্রাণ থাকবে। মূলত, পৃথিবীতে লক্ষাধিক বছরের পুরোনো কিছু পাওয়া গেলেই এই চিন্তা যেন বারেবারে ফিরে আসে। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার অস্ট্রেলিয়ায় এমন একটি কাঁকড়াবিছের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে যা ২৫ কোটি বছরের পুরোনো।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই কাঁকড়াবিছেটি এমন একটি প্রজাতির যা প্রায় ২৫ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ছিল। মূলত, এটি একটি সাধারণ কাঁকড়াবিছে নয় বরং সেটি একটি বিশাল সামুদ্রিক বিছে। এই কারণে, এটি “সমুদ্র শয়তান” নামেও পরিচিত। একটা সময় ছিল যখন Woodwardopterus Freemanorum নামের এই কাঁকড়াবিছে নদী থেকে সাগর এবং হ্রদে তার রাজত্ব বিস্তার করেছিল।
১৯৯০ সালে প্রথম জীবাশ্ম পাওয়া যায়:
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এক মিটার লম্বা এই কাঁকড়াবিছে স্বাদু জলে থাকতেই পছন্দ করত। এই দৈত্যাকার প্রাণীটির জীবাশ্ম প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ১৯৯০ সালে সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ডল্যান্ডের গ্রামীণ এলাকায়। এরপর এই নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা শুরু হয়। এদিকে, এখন এই জীবাশ্ম গবেষণার জন্য রাখা হয়েছে কুইন্সল্যান্ডের মিউজিয়ামে।
বিশ্বের অন্যান্য কাঁকড়াবিছের প্রজাতির সাথে এই জীবাশ্মের তুলনা করে এটি নিয়ে গভীর গবেষণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই গবেষণায়, অন্যান্য প্রজাতিগুলির সাথে এটির সাদৃশ্যের দিকেও বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, এই জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করোনার সময় ত্বরান্বিত হয়েছিল কারণ ওই সময়ে লকডাউন থাকার কারণে যাদুঘরটি সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ ছিল। তবে, এই জীবাশ্মটি অন্য যে কোনও প্রজাতির চেয়ে প্রায় ১০ মিলিয়ন বছরের নতুন হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এটা ছিল এই ধরনের শেষ প্রজাতি:
এই প্রসঙ্গে কুইন্সল্যান্ড মিউজিয়ামের কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু রোজফেল্ডাসের মতে, কয়লার মধ্যে সংরক্ষিত এই সামুদ্রিক প্রাণীটির জীবাশ্মটি প্রায় ২৫.২ কোটি বছর পুরনো। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই এই জীবাশ্ম নিয়ে নিবিড় গবেষণা করা হয়েছে যাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় ইউরিপ্টেরিডা বলা হয়। রোজফেল্ডাসের মতে, এটিই ছিল সমগ্র বিশ্বে এই ধরণের শেষ ইউরিপ্টেরিডা।
https://twitter.com/CQUni/status/1496274028692217858?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1496274028692217858%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.indiatimes.com%2Fhindi%2Fenvironment%2Fstory-about-huge-ancient-sea-scorpion-species-563062.html
এছাড়াও, বিজ্ঞানীদের মতে, এরপর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় এই অনন্য প্রাণীটির প্রজাতি। এখন এই জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করা হবে এই প্রজাতির কাঁকড়াবিছের মোট যাত্রা কতদিনের ছিল সেই বিষয়টি জানার জন্য। সেইসঙ্গে এই ধরনের কাঁকড়াবিছে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই ছিল নাকি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে ছিল সে তথ্যও সংগ্রহ করা হবে।