লম্বায় ৩৩ ফুট, ওজন ৫ টন! আর্জেন্টিনায় খোঁজ মিলল বিশ্বের বৃহত্তম র‍্যাপ্টার ডাইনোসরের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে এক সময়ে যে দাপিয়ে বেড়াত ডাইনোসরের মত বৃহদাকার এবং ভয়ঙ্কর প্রাণী তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও, প্রায়শই এখন খোঁজ পাওয়া যায় ডাইনোসরের জীবাশ্ম-র। যেগুলির ওপর ভিত্তি করে গবেষণার মাধ্যমে এই জীব সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

এমতাবস্থায়, এবার লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় র‍্যাপ্টর ডাইনোসরের দেহাবশেষের খোঁজ মিলল। মনে করা হচ্ছে যে, এই গোত্রের ডাইনোসর প্রায় ৭০ মিলিয়ন বছর আগে আর্জেন্টিনা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াত। এছাড়াও, র‍্যাপ্টর ডাইনোসরের ধারালো নখ এবং অত্যন্ত ক্ষিপ্রতা এই জীবকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ডাইনোসরদের মধ্যে অন্যতম একটি হিসেবে বিবেচিত করেছে।

জানা গিয়েছে যে, আর্জেন্টিনায় পাওয়া এই ডাইনোসরটি প্রায় ৩৩ ফুট লম্বা এবং ৫ টন ওজনের। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এটি এখনও পর্যন্ত পাওয়া মেগার‍্যাপ্টরগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় ডাইনোসর। মূলত, আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্স থেকে ২৬৯৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এল ক্যালাফেতে এই ডাইনোসরের হাড় পাওয়া গেছে।

হাড়গুলি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে, এই মেগার‍্যাপ্টরটি প্রায় ৩০ থেকে ৩৩ ফুট লম্বা এবং এটির ওজন প্রায় ৫ টন ছিল। যা একটি গন্ডারের ওজনের প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়াও, মনে করা হচ্ছে যে, এই ডাইনোসরের একটি বড় মেরুদন্ড ছিল যা পেশী, স্নায়ু এবং লিগামেন্টের সাথে সংযুক্ত থাকত। এই কারণেই, বিশাল এই ডাইনোসর হাঁটা বা দৌড়ানোর সময় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারত এবং পা-ও ভাঁজ করতে পারত।

মেগার‍্যাপ্টরের লম্বা লেজ এবং দু’টি পা ছিল:
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট গবেষণার লেখক মাউরো আরানসিগা রোল্যান্ডো জানিয়েছেন, “র‍্যাপ্টরের এই হাড়গুলি আমাদের মেগার‍্যাপ্টরের শারীরিক গঠন সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে। এই র‌্যাপ্টররা এমন একটি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিল যার কঙ্কাল টাইরানোসরাসের মতো ছিল না। অর্থাৎ, সেগুলির হাড় শক্ত ছিল না। তবে, মেগার‍্যাপ্টরের একটি লম্বা লেজ এবং দু’টি পা ছিল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল তাদের বিশাল নখ ছিল। যেগুলির আকার ছিল প্রায় ১৩.৭ ইঞ্চি।”

এই নখই ছিল মেগার‍্যাপ্টর ডাইনোসরদের প্রধান অস্ত্র। মূলত, এই ধরণের ডাইনোসর প্রথম আর্জেন্টিনার নিউকুয়েনে ১৯৯৬ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এরপর অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও থাইল্যান্ডেও মেগার‍্যাপ্টরের দেহাবশেষের সন্ধান মেলে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিউকুয়েনে পাওয়া ডাইনোসরের নখ ৪০ সেমি লম্বা ছিল।

download 36 1

এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়ায় এদের তুলনায় ছোট ডাইনোসরদের পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এল ক্যালাফেতে যে ডাইনোসরটি পাওয়া গেছে তা ছিল এই প্রজাতির বিলুপ্তির ঠিক আগে সবচেয়ে বড় ডাইনোসরগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। পাশাপাশি, তখন এই এলাকাটি খুব গরম থাকত বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর