বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্র জগতের রত্ন স্বরূপ ছিলেন অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায় (Manu Mukherjee)। দীর্ঘ অভিনয় কেরিয়ারে বহু ছবি, সিরিয়াল উপহার দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিনয় দাগ কেটে গিয়েছে দর্শকদের মনে। কিন্তু প্রতিভার যথাযথ সম্মান কি পেয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা? বোধকরি না।
২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে চিরতরে ইহজগৎ ছেড়ে বিদায় নেন মনু মুখোপাধ্যায়। তাঁর জীবনের শেষ কাজ পরিচালক তথাগত চট্টোপাধ্যায়ের ‘ভটভটি’ ছবিতে। খুব শীঘ্রই বড়পর্দায় মুক্তি পাবে ছবিটি। শেষ বারের জন্য পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠবেন সত্যজিতের ‘মছলিবাবা’।
২০১৯ এ ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন মনু মুখোপাধ্যায়। জাহাজপট্টির বাসিন্দা চারজন বৃদ্ধ। সারা দিন তাস খেলে আর নিন্দে, কূটকাচালি করেই কাটায় তারা। এদের মধ্যেই একজনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনু মুখোপাধ্যায়। শুটিং শুরু হওয়ার আগে তিন মাস মহড়া হয়েছিল। সে সময়ে ওঠা বসার সময়েও কয়েকজনের সাহায্য লাগত বছর ৯০ এর অভিনেতার।
অথচ শুটিংয়ে তাঁর অন্য রূপ। বয়স ভুলে যুবকদের মতোই হাঁটা চলা করেছেন। এমনকি প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে নেচেওছেন! বাড়িতে ধূমপান করা নিষেধ বলে লুকিয়ে তথাগতর কাছে সিগারেট চাইতেন তাঁর ‘মনুদা’। সেটা অবশ্য পাননি। বরং জুটেছে আদরের শাসন।
আক্ষেপের মধ্যেই ইন্ডাস্ট্রির দিকে আঙুল তুলেছেন তথাগত। এখানে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কাজ মেলে। প্রতিভা সুযোগ পায় না। নয়তো এতদিনে আরো অনেক ছবিতে কাজ করতে পারতেন মনু মুখোপাধ্যায়।
ভটভটির গোটি টিমের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন তথাগত। মধ্যমণি হয়ে হাসিমুখে বসে রয়েছেন মনু মুখোপাধ্যায়। পরিচালক লিখেছেন, এই ছবিটা বিশেষ কারণ এর সঙ্গে মনু মুখোপাধ্যয়ের মতো মানুষের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। ভটভটিই ওঁর অভিনীত শেষ সিনেমা যা এ বছর মুক্তি পাবে। হয়তো ওঁর শেষ কাজও।
https://www.instagram.com/p/CcspSv9sGtR/?igshid=YmMyMTA2M2Y=
তথাগতর কথায়, “এও তো থেকে যাওয়া, এক রকমের অমরত্ব, সিনেমাগুলোর মধ্যে দিয়ে, ভটভটির মধ্যে দিয়ে। এই বয়সেও যে মেধা, যে রসবোধ উনি ধারন করতেন তার ছিঁটেফোঁটাও হয়তো ভটভটি সুবিচার করতে পারেনি, তবে ওঁর উজ্জ্বল তারুণ্যের উপস্থিতি আমাদের সাথে থেকে গেছে।”