বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই কয়েক মাস আগে সামনে এসেছিল হাই স্পিড ট্রেনের লুক! পাশাপাশি, প্রকাশ পেয়েছিল এই ট্রেনের একাধিক ফিচার্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও। তবে, এবার ৮২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দিল্লি-গাজিয়াবাদ-মিরাট রিজিওনাল র্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম (RRTS) প্রকল্পের জন্য ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (NCRTC)-কে ভারতের প্রথম সেমি হাই-স্পিড আঞ্চলিক ট্রেন সফলভাবে পৌঁছে দিল প্রস্তুতকারী সংস্থা Alstom।
ইতিমধ্যেই গত শনিবার (৭ মে) গুজরাটের সাভলিতে Alstom-এর উৎপাদন সাইটে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই হাই-স্পিড ট্রেনটিকে সামনে নিয়ে আসা হয়। ১৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় চলতে সক্ষম এই ট্রেনটি নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিকভাবে। পাশাপাশি এটি দিল্লি এবং মিরাটের মধ্যে যাতায়াতের সময়কালকে কমিয়ে মাত্র ৫৫ মিনিটে নিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত, দিল্লির জনপ্রিয় লোটাস টেম্পল দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ট্রেনের নকশাটি প্রথম ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে উন্মোচন করা হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালের জুলাই থেকে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথে, প্রথম ট্রেনটি এক বছরের মধ্যেই প্রস্তুত করে ফেলেছে সংস্থা।
এই প্রসঙ্গে উৎপাদনকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, এই সেমি-হাই-স্পিড অ্যারোডাইনামিক ট্রেনগুলি অত্যন্ত শক্তি সাশ্রয়ী। পাশাপাশি প্রতিবন্ধী সহ সাধারণ যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে আরাম এবং সুরক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদান করা হয়েছে এই ট্রেনে।
এই ট্রেনগুলিকে Alstom-এর হায়দ্রাবাদ ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টারে ডিজাইন করে তারপর সাভলিতে তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি হওয়া এই ট্রেন কেন্দ্রীয় সরকারের “মেক ইন ইন্ডিয়া” প্রোগ্রামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সাভলির এই কেন্দ্রটি মূলত বগি এবং বডি তৈরি করে ও ট্রেন পরীক্ষা করে। এছাড়াও, Alstom-এর এই প্ল্যান্টটি সফলভাবে দিল্লি মেট্রো এবং কুইন্সল্যান্ড রেলেও ট্রেন সরবরাহ করেছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে এটি কানপুর এবং আগ্রা শহরের জন্য মেট্রো রেলও তৈরি করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিল্লি – মিরাট RRTS লাইনটি ভারতে প্রথম ইউরোপীয় ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (ETCS) হাইব্রিড লেভেল 2 সিগন্যালিং সিস্টেম গ্রহণ করেছে। যদিও, এটি ইউরোপীয় রেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ERTMS)-এর প্রধান ট্রেন নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান।
এদিকে, ইতিমধ্যেই কিছু দিন আগে NCRTC-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনয় কুমার সিং জানিয়েছেন যে, দিল্লি-মিরাট হাই স্পিড ট্রেনে অসুস্থ রোগীদের জন্য স্ট্রেচার রাখার ব্যবস্থা থাকবে। এর সাথে ল্যাপটপ এবং মোবাইল চার্জ করার জন্য একটি সিঙ্গেল চার্জিং পয়েন্টও করা হয়েছে, যা প্রতিটি সিটে পাওয়া যাবে। প্রতিটি কোচে বড় বড় আয়না বসানো হয়েছে যাতে যাত্রীরা বাইরের দৃশ্য দেখতে পারেন। এছাড়াও, রেলের স্টেশনটি এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে যাতে অসুস্থ ব্যক্তিদের স্ট্রেচারের মারফত দ্রুত রেলের বগিতে পৌঁছন যেতে পারে।
এছাড়াও, তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রতিটি ট্রেনে একটি করে প্রিমিয়াম ক্লাস কোচ থাকবে এবং মহিলাদের জন্যও একটি কোচ সংরক্ষিত রাখা হবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে র্যাপিড রেল কোচে আরামদায়ক স্ট্যান্ডিং স্পেস-লাগেজ র্যাক বসানো হয়েছে।