বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার জোর ধাক্কা এসে লাগল ভারতীয় অর্থনীতিতে। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া রেপো রেট বাড়াতেই কার্যত রক্তাক্ত হয়েছিল শেয়ার বাজার। তবে, এবার সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙে সোমবার ডলার প্রতি ভারতীয় মুদ্রার দাম দাঁড়াল ৭৭ টাকা ৪২ পয়সায়। যা এখনও পর্যন্ত সর্বকালের সর্বনিম্ন হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
গত শুক্রবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময়েও নিম্নমুখী ছিল টাকার দর। তবে, সোমবার বাজার খুলতেই কার্যত রেকর্ড হারে পতন ঘটে ভারতীয় মূল্যের। এদিকে, একসময়ে টাকার দামের পতনের কারণে ইউপিএ সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল বিজেপি। কিন্তু, আজ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টে গেছে। বরং, বিজেপি জমানাতেই টাকার দামে সবচেয়ে বেশিহারে পতন ঘটল।
এদিকে সপ্তাহের শুরুর দিনই শেয়ার বাজারের সূচক ছিল ক্রমশ নিম্নমুখী। সোমবার দুপুর ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ০.৫৯ শতাংশ বা ৩২২.২৩ পয়েন্ট পতন দেখা যায় গত সেশনের তুলনায়। এর জেরে সেনসেক্স গিয়ে দাঁড়ায় ৫৪,৫১৩.৩৫ পয়েন্টে। পাশাপাশি, পতন ঘটে নিফটিতেও। যদিও, এই প্রসঙ্গে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে এবং চিনে নতুন করে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে।
তবে, আজকের সবচেয়ে ভালো সেক্টর ছিল নিফটি আইটি। ৫৮.৪৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায় আইটি সেক্টর। যার ফলে আজকের বাজারে সবচেয়ে লাভবান সেক্টর ছিল এটি। নিফটি আইটি-র সূচক আজ পৌঁছে যায় ৩০,৭৭৭.৯০-তে। পাশাপাশি, এদিন সবচেয়ে লাভবান শেয়ার ছিল পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন। এমনকি, গত সেশনের তুলনায় এখানে ৫.৩৫ টাকা বা ২.২৪ শতাংশ বেড়েছে। আপাতত, পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ২৪৩.৭৫ টাকায়।
কেন পতন ঘটছে টাকার দামে?
ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সামাল দিতে রেপো রেট বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। আর এরই প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে। পাশাপাশি, যুদ্ধের পরিস্থিতিতে দেশীয় বিনিয়োগকারীরাও নতুন করে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না। তারও প্রভাব পড়েছে ভারতীয় মুদ্রায়। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন যে, বিদেশের বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে অস্থিরতা থাকার কারণেই ভারতীয় টাকার মূল্যের ওপর বিরাট হারে প্রভাব পড়ছে।
এদিকে, গত সপ্তাহেই মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে আমেরিকার ফেডেরাল রিজার্ভ তাদের সুদের হার ইতিমধ্যেই বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উদ্বৃত্ত অর্থ ভারতীয় বাজারে বিনিয়োগ করতে পারছেন না। এমনকি, অবস্থা এতটাই বেগতিক যে, যুদ্ধের আবহে দ্রুত শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই স্টক এক্সচেঞ্জের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বৃহস্পতিবার ২ হাজার কোটিরও বেশি মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।