বাংলাহান্ট ডেস্ক : দার্জিলিংয়ে আমরণ অনশনে বসলেন বিমল গুরুং। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ভোটের দিন ঘোষণা করার পরই তার প্রতিবাদে এহেন সিদ্ধান্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধানের।
গতকালই ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণের জন্য সর্বদল বৈঠক ডাকে নির্বাচন কমিশন। সেই বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এই মুহুর্তে ভোটের বিরোধিতা করেন বিমল গুরুং। কিন্তু তাতেও ফল না মেলায় এবার অনশনে বসলেন তিনি। এদিন জিজেএম প্রধান বলেন, ‘আমরা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বলেছিলাম সেগুলো সম্পন্ন করার পর জিটিএ ভোট হোক। তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু এখন সেসব কিছু না করেই সোজা ভোটের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার।’
গুরুংয়ের দাবিদাওয়ার খুব একটা পাত্তা দিতে রাজি নয় নবান্ন। একটা সময় বিরাট প্রতাপ নিয়ে পাহাড়ে রাজনীতি করলেও এখন সেই দাপট কোনঠাসা হয়ে পড়েছে গুরুংয়ের। গণভিত্তিও নেই আগের মতন। বর্তমানে হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ডকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছে পাহাড়ের তরুণ তরুণীরা। কিন্তু এখন পাহাড়ের ভোট কেন রুখতে চাইছেন গুরুং? রাজনৈতিক মহলের দাবি, জিটিএ কে ঢাল করেই তার পিছনে নিজের জমি শক্ত করতে চাইছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ে এখনও পায়ের নীচে মাটি নেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। এবার দার্জিলিংয়ে এখনই ভোট হলে হামরো পার্টির জয়ের সম্ভাবনা বিপুল। তাই এরই ফাঁকে জিটিএ নিয়ে আন্দোলন করে সময় নষ্ট করতে চাইছেন বিমল গুরুং, যাতে সেই সুযোগে খুঁটি শক্ত করতে পারে দল।
গুরুং চাইছেন সংবিধানের ২৪৪ নম্বর ধারা মেনে জিটিএ কে আংশিক স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য দেওয়া হোক। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার জন্য দরকার সংবিধান সংশোধন করার। যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর সেই সময়কেই ব্যবহার করতে চাইছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এই দাবি যে অত্যন্ত সুচারু পরিকল্পনা করেই নেওয়া হয়েছে নির্বাচনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিতে এমনটাই মত পর্যবেক্ষক মহলের।
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ জুনই হতে চলেছে জিটিএ নির্বাচন। এই প্রেক্ষিতে বিমল গুরুংয়ের প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ট। এবার এই আন্দোলন এবং প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয় নাকি আরও একবার ২০১৭ সালের ছায়া ফেরে দার্জিলিংয়ে, তাই এখন দেখার।