গাঁজা, অস্ত্র পাচারের কাণ্ডারি সিভিক ভলান্টিয়ার! বাড়ি থেকে তুলে আনল পুলিশ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গাঁজার কারবারি বন্ধ করতে উদ্ধত রাজ্য পুলিশ। বুধবার তখন গভীর রাত। মঙ্গলকোটের নতুনহাটে লোচন দাস সেতুতে নাকা চেকিং চলছে। সেই সময়ে গাঁজা সমেত তিন জন বেআইনি চোরা চালানকারীকে গ্রেফতার করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। শুধু গাঁজাই নয় পাওয়া গেছে, বেআইনি হাতিয়ারও।

পুলিশের মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে, তাদের মধ্যে ধৃত এক ব্যক্তির নাম সংকেত ঘোষ। বাড়ি রামকৃষ্ণপুর গ্রামে, যেটি বীরভূম জেলার নানুর থানা এলাকায় অবস্থিত। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে গোপনে তল্লাশি চালিয়ে তার বাড়িতে এবং সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ আটক করেছে সংকেতের একটি মোটর সাইকেল পর্যন্ত। চাঞ্চল্যকর খবর হল, সংকেতবাবু আদতে নানুর থানার একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কৌশিক বসাকের বক্তব্য অনুযায়ী, ”এই চক্রের সঙ্গে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার যোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চলছে।”

জানা গেছে, মোট ২৪ কেজি গাঁজা-সহ তিন জন দুষ্কৃতীকে থানায় তুলে আনেন পুলিশ। তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৩ রাউন্ড গুলি বাজেয়াপ্ত হয়। বিহারের বাসিন্দা টুনটুন কুমার, পিন্টু কুমার এবং মঙ্গলকোটের কোটালঘোষের রাজেশ শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আপাতত তারা রয়েছে পুলিশ হেফাজতে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে সংকেত ঘোষের নাম। তারপর তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা তথ্য সত্যি অবাক করার বিষয়। এই ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড হল শেখ রাজু। সে মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা অসীম দাস হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। গত বছর ১২ জুলাই নিহত হন লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অসীম দাস। তার এক মাসের মধ্যেই শেখ রাজুকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করে আনে সিআইডি। বর্তমানে শেখ রাজু বর্ধমান সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি থাকলেও ধূর্ত শেখ জেলে বসেই ফোনের মাধ্যমে গাঁজা ও অস্ত্রপাচারের চক্র সামলে চলছিল। তার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হয় তিন দুষ্কৃতীকে। পুলিশ এবং এসওজি সেল গত বুধবার অভিযান চালিয়ে আনে এই সাফল্য ।

বীরভূমের নানুর থানা এলাকার সিতাই গ্রামে বাড়ি শেখ রাজুর। বেশীর ভাগই মঙ্গলকোটের মল্লিকপুরে শ্বশুরবাড়িতে থাকত সে। বেআইনি বালির কারবারও তার পার্শ্ব পেশা। সংকেত ঘোষের সঙ্গে তার ছোটবেলা থেকেই নাকি ভাব। জেলে বসেই রাজুর সঙ্গে সংকেত যোগাযোগ রাখত। পুলিশ জানিয়েছে, সংকেত ঘোষের তত্ত্বাবধানেই বীরভূমের শান্তিনিকেতনে একটি লজে গত ২২ মে থেকে টুনটুন কুমার ও পিন্টু কুমার অপেক্ষায় ছিল সঠিক সময়ের।

গাঁজা ভরতি তিনটি ক্যারিয়ার বুধবার রাতে মঙ্গলকোট সীমান্ত অবধি টুনটুন কুমার ও পিন্টু কুমারকে পৌঁছে দেয় সংকেত ঘোষ। সংকেতকে শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে, তাকে ৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সাথে সাথে জেলের মধ্যে আসামির হাতে কীভাবে মোবাইল উঠে এল তার ব্যাপারে তদন্তের আভাস দেন।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর