বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত শনিবার হলদিয়ায় শ্রমিক সমাবেশের মঞ্চ থেকে বিচার ব্যবস্থার ওপর ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচার ব্যবস্থার প্রতি একের পর এক কটাক্ষ করতে দেখা যায় তৃণমূল সাংসদকে আর এবার তার জেরেই কলকাতা হাইকোর্টে অভিষেকের বিরুদ্ধে দায়ের করা হলো মামলা। ফলে তৃণমূল নেতার অস্বস্তি আরো বাড়লো বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
উল্লেখ্য, শনিবার সভার মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, “লজ্জা লাগলেও এটা বলতে হবে যে, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের বিচার ব্যবস্থায় 1% এমন মানুষ রয়েছেন, যারা তল্পিবাহকের কাজ করে চলেছেন। প্রত্যেকটি মামলাতেই তারা সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। খুনের মামলায় স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। আপনারাই বলুন, আদালত খুব বেশি হলে নিরাপত্তা দিতে পারে। কিন্তু স্থগিতাদেশ কেন দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, অতীতে বগটুই অগ্নিকাণ্ড থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে রায় দেয় আদালত। প্রতিটি মামলায় সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া থেকে আরম্ভ করে তারা যেসব রায় দিয়েছে, তাতে সরকারের পিঠ ক্রমশ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর মাঝেই আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই অফিসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কলকাতা হাইকোর্ট। এসকল ঘটনায় ক্রমশই সরকারের সহ্যের বাঁধ ভাঙতে থাকে আর সে কারণে অভিষেক এহেন মন্তব্য করেন বলেই আন্দাজ রাজনৈতিক মহলের।
উল্লেখ্য, শনিবার অভিষেকের এসকল মন্তব্যের পরে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধী দলগুলি থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সরব হন। এবার তাঁর বিরুদ্ধেই দায়ের করা হলো মামলা। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী। এরপরে আদালতে মামলাটি গৃহীত হয় এবং আজকেই সব্যসাচী ভট্টাচার্যর বেঞ্চে এর শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালতকে অবমাননা করার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বলে রাখা ভালো, শনিবারই অভিষেক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “আমি ভয় পাই না, এই কথা বলার জন্য যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাও আমি পিছিয়ে যাব না, কারণ সত্যি বলতে আমার বিবেকে বাধে না।” তবে শেষ পর্যন্ত এদিন তাঁর বিরুদ্ধে শুনানিতে কি হয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।