বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শুরু করে কয়লা পাচার হোক কিংবা প্রোমোটার রাজ, একের পর এক দুর্নীতির মামলা যতই সামনে উঠে আসছে, ঠিক ততই সবদিক থেকেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে শাসক দল। আর এবার সেই দুর্নীতির আঁচ গিয়ে পড়লো স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। বর্তমানে যখন সরকারের কাছে টাকা নেই বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই মুহূর্তে স্বাস্থ্য ভবনের বিরুদ্ধে উঠলো এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। বর্তমানে একটি ট্যাবলেট পিছু যেখানে ক্রয় মূল্য দুই টাকা, সেখানে 12 টাকারও বেশি দিয়ে সেগুলি দিনের পর দিন ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য ভবনের বিরুদ্ধে। আর এর পরিণামে রাজ্য কোষাগার থেকে প্রায় 50 কোটি টাকা নয়ছয় হওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চড়া দামে ডায়াবেটিসের ওষুধ কিনে চলেছিল সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর। অতীতে জেনেরিক ওষুধ না থাকার কারণে প্রায় 12 টাকা 43 পয়সায় অন্য ট্যাবলেট কিনতে হচ্ছিলো তাদের। তবে পরবর্তীকালে জেনেরিক ওষুধ মার্কেটে এসে যাওয়া সত্বেও তা না কিনে বরং বেশি দামে ট্যাবলেট কেনার দিকেই ঝুঁকে থাকে সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর আর এখানেই উঠে গিয়েছে প্রশ্ন! একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2019 সালের ডিসেম্বর থেকে গত বছরের 26 শে মার্চ পর্যন্ত চড়া দামে ডায়াবেটিসের ট্যাবলেট কেনে তারা আর এর ফলে প্রায় 50 কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হয় রাজ্য কোষাগার থেকে।
উল্লেখ্য, মার্কেটে প্রত্যেকটি ওষুধের একটি জেনেরিক প্রোডাক্ট থাকে আর যে সংস্থা সেই প্রোডাক্ট সবচেয়ে কম দামে বিক্রয় করে, তাদের থেকেই সেটি কিনে নেয় সরকার। একমাত্র এটি বাজারে উপলব্ধ না থাকলেই অন্য ট্যাবলেট চড়া দামে কিনতে বাধ্য হয় তারা। কিন্তু প্রায় এক বছরের উপর সময় ধরে কমদামি জেনেরিক প্রোডাক্ট মার্কেটে থাকলেও কেন বেশি দামে ট্যাবলেট কিনে চলছিল স্বাস্থ্য ভবন, তার কোনো সদুত্তর মেলেনি।
স্বভাবতই, একদিকে যখন ক্রমশ একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে শাসকদল, সেই সময় এই অভিযোগটি বৃহত্তর বিতর্কের সৃষ্টি করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস বাবু বলেন, “বর্তমানে রাজ্যে যেখানে টাকার অভাব চলছে, সেখানে জীবনদায়ী একটা ওষুধ নিয়ে যদি এহেন ঘটনা ঘটে চলে, তাহলে সেটা যথেষ্ট চিন্তার। এই ঘটনায় যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার।” সম্পূর্ণ অভিযোগটি সামনে আসার পর যদিও স্বাস্থ্য অধিকর্তার পক্ষ থেকে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তবে এই বিতর্ক শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।