বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রেমেরও ফাঁদ পাতা ভুবনে, কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে! পুলিশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভয় উপেক্ষা করে, প্রায় এক ঘণ্টা নদী সাঁতরে, এমনকি বাঘের ভয় কে জয় করে সুন্দরবনের জঙ্গল পেরিয়ে ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসেছিলেন বাংলাদেশের তরুণী। ভালবাসার মানুষকে জন্ম-জন্মান্তরের বাঁধনে বাঁধতে তাঁর হাত ধরে সুন্দরবন থেকে সোজা চলে যান কালীঘাটে। তারপর কালীঘাট মন্দিরে বিয়ে করে সাতপাকের বন্ধনে আবদ্ধ হন দুই বাংলার তরুণ-তরুণী।
দুজনে সংসারও পাতেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। আইন যে বড় নিষ্ঠুর! একেবারে হাতকড়া পরিয়ে ওই তরুণীকে নিয়ে গেল গরাদে। বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার অভিযোগে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটির নাম কৃষ্ণা মণ্ডল। বাড়ি বাংলাদেশের শ্যামনগরে। মাস ছয়েক আগে বাংলাদেশের ওই তরুনীর সঙ্গে পরিচয় হয় নরেন্দ্রপুর থানার রেনিয়া এলাকার এক যুবকের। তারপর অভীক মণ্ডল নামে ওই যুবক মেয়েটিকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। ক্রমশ দৃঢ় হয় তাঁদের সম্পর্কের বাঁধন। এরপরই প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘর ছাড়ে মেয়েটি। রাতের অন্ধকারে নদী-জঙ্গল পেরিয়ে চলে আসে ভারতে। তবে মেয়েটির কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র ছিল না।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার একেবারে মাতলা নদীর পাড়েই বাড়ি কৃষ্ণার। দিন চারেক আগে সাতসকালে সকলের অলক্ষ্যে ঝুপ করে মাতলা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে দেন কৃ্ষ্ণা। তারপর প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে সাঁতার কেটে একেবারে ওঠেন এবার বাংলার সুন্দরবনের কৈখালি এলাকায়। কৃষ্ণার প্রেমি যান কালীঘাটে। সেখানে দুজনে বিয়ে করে বাংলাদেশী বউ নিয়ে ঘরে ফেরেন অভীক। তাঁদের বিয়েতে আপত্তি তোলেননি অভীকের পরিবারও। বরং প্রেমের টানে কৃষ্ণার বাংলাদেশ থেকে রায়নায় আসার কাহিনী অভীকের পরিবার থেকে প্রতিবেশীদের মুখে-মুখে ঘোরে। কিন্তু সেটাই কাল হল!
কৃষ্ণার সাহসিকতার গল্প পৌঁছে যায় পুলিশের কাছেও। তারপর সোমবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ অভীকের বাড়িতে হানা দিয়ে নববধূ কৃষ্ণাকে গ্রেফতার করে। বাংলাদেশ থেকে বেআইনিভাবে ভারতে আসার অভিযোগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সিনেমার মতো এই প্রেমিক-প্রেমিকার পরিণতি এবার কী হবে, তা আদালতই বলবে