বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিজ্ঞানের ওপর ভর করে সমাজ এবং বিশ্ব দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। পাশাপাশি, উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রাও! এমনকি, যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন শহর এবং দেশ। তবে, এবার সবাইকে ছাপিয়ে এক বিষ্ময় তৈরি করতে চলেছে সৌদি আরব! ইতিমধ্যেই সেখানে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩৫,০০,০০০ কোটি টাকা (Indian Rupee) খরচ করে NEOM নামক এক নগরায়ণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, NEOM হল সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সালমানের মস্তিষ্কপ্রসূত একটি পরিকল্পনা। যেখানে দু’টি ৫০০ মিটারের (১,৬৪০ ফিট) গগনচুম্বী ভবন নির্মাণ করা হবে যা অনুভূমিকভাবে প্রসারিত থাকবে। পাশাপাশি, ওই প্রতিবেদনে আরও যোগ করা হয়েছে যে, ওই আকাশচুম্বী ভবনগুলিতে আবাসনের পাশাপাশি বাণিজ্যিক এবং বিভিন্ন অফিসও যুক্ত থাকবে। লোহিত সাগরের উপকূল থেকে মরুভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে এগুলি।
জানা গিয়েছে, এই পরিকল্পনাটি গত বছর কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিজাইনারদের একটি অর্ধ-মাইল দীর্ঘ প্রোটোটাইপে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, যদি এটি সম্পূর্ণভাবে এগিয়ে যায়, তাহলে এগুলি বিশ্বের বর্তমান বৃহত্তম ভবনগুলির চেয়ে বড় হবে, যেগুলির বেশিরভাগই বসবাসের পরিবর্তে কারখানা বা মল হিসেবে বিবেচিত হয়।
২০১৭ সালে, সৌদি আরব রিয়াধে “ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ” প্রোগ্রামে NEOM সিটির ঘোষণা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলকে “হাই টেক সেমি অটোনমাস” রাজ্যে পরিণত করতে পারে। এর পাশাপাশি এটি বিদেশি বিনিয়োগে আকৃষ্ট করবে এবং তেল বিক্রয়ের উপর নির্ভরশীলতা থেকে দূরে সরিয়ে সৌদির অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতেও সহায়তা করবে। শুধু তাই নয়, এটি বিশ্বের অত্যাধুনিক নগরায়ণ হিসেবেও বিবেচিত হবে।
এই প্রসঙ্গে NEOM-এর চিফ একজিকিউটিভ অফিসার নাদমি আল-নাসর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এই পরিকল্পনা সত্যিই যুগান্তকারী। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, “আমরা যখন খুব ভালভাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত তখন আমরা যা উপস্থাপন করব, তা কার্যত বৈপ্লবিক হবে।”
এদিকে, এই প্রকল্পের বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মচারীদের মতে, এই পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য, NEOM ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক একটি স্থাপত্য সংস্থার সাথে কাজ করেছে যার নাম মরফোসিস। থম মেইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাকে আমেরিকান স্থাপত্যের “The Bad Boy” হিসেবে অভিহিত করা হয়।
উল্লেখ্য যে, মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা রয়েছে। এদিকে, বর্তমান যুবরাজ মোহাম্মদের উত্থানের আগে সৌদির যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন তালাল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। সেই আকাশচুম্বী ভবনটি শুধুমাত্র আংশিকভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।