দিদি আর আমাকে ভালবাসেন না! মমতার সিঙ্গুর সফরে ডাক না পেয়ে অভিযোগ তাপসী মালিকের বাবার

বাংলাহান্ট ডেস্ক : তাপসী মালিককে মনে পড়ে? হ্যাঁ, সেই তাপসী মালিক, যিনি সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় গণধর্ষিতা হন। পরে তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুর সফরের পর আরও একবার সংবাদ শিরোনামে তাপসী মালিক। শুক্রবার সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়ায় এসে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন ও তাপসী মালিক নাম করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেলেন সেই তাপসী মালিকের বাবা-মা’ই। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে একবারও মনে করেননি বলে অভিযোগও করেছেন তিনি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি দিদিকে ভালবাসলেও, দিদি আর আমাকে ভালবাসেন না।’

এদিন সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়ায় সন্তোষী মায়ের মন্দিরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নতুন একটি রেলওয়ে ওভারব্রিজেরও উদ্বোধন করেন তিনি ৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে কেন তাঁরা ডাক পেলেন না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাপসী মালিকের বাবা ৷ সেই তাপসী মালিক যাকে সিঙ্গুর জমি আন্দোলন পর্বে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের তৎকালীন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধেই ৷ যে তাপসী মালিকের মৃত্যু ও তারপর তৈরি হওয়া ক্ষোভকে হাতিয়ার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলন এবং বঙ্গ-রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই তাপসীর বাবাকেই কেন এদিন ব্রাত্য রাখা হল সেই প্রশ্নই উঠে আসছে ৷

মনোরঞ্জন মালিক বলেন, ‘সকালে বেচারাম মান্না আমাকে ফোন করেন। তিনি বলেন জানান এটা সরকারি অনুষ্ঠান । তাই আমাকে না ডাকার বিষয়ে তিনি ঠিক কিছু বলতে পারবেন না । আমার বক্তব্য, এটা যদি সরকারি অনুষ্ঠানই হয় তাহলে সিঙ্গুরের মাতঙ্গিনী পরিচিত সরস্বতী দেবী মঞ্চে উঠলেন কি করে ! তাঁর বেলা কি এটা সরকারি অনুষ্ঠান ছিল না? আর যে তাপসী মালিককে নিয়ে একসময় সারা বাংলা তোলপাড় হয়ে সেই তাপসীর বাবা-মাকে ডাকার কথা মনেও হল না দিদির। দিদিকে আমি ভালবাসতাম, আমাকে দিদি আর ভালবাসেন না । আমি এত কিছু করলাম অথচ ডাক পেলাম না । এর দায় দিদির । আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ করছি । সারা বাংলার মানুষ ভাবল আমাকে দিদি ত্যাগ করেছেন।’

সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না এই বিষয়ে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ সরকারি অনুষ্ঠান । এই অনুষ্ঠানে জেলাশাসক ও সিএম এর অনুমোদনে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে মনোরঞ্জন বাবুকে ডেকেছিলাম । স্টেজের পাশে থাকার জন্য । মুখ্যমন্ত্রী যদি বলেন তখন ডেকে নেওয়া হবে। সেটা উনি শোনেননি। সরস্বতী দেবী পাশে ছিলেন, তাই তাঁকে স্টেজের ওপর ডাকা হয়েছিল। কে রাজনীতি করল এটা দেখার দরকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা পথে চলছেন আমরাও তাঁর সঙ্গে সবসময় আছি।’

tapasi malik father

সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়াতে গিয়ে এদিন মমতা সন্তোষী মায়ের মন্দিরে যান। এলাকার শিশুদের হাতে প্রসাদও বিতরণও করেন তিনি। সিঙ্গুরে যখন আন্দোলন শুরু করেন তিনি তখন অনশন মঞ্চ থেকেই সন্তোষী মায়ের ব্রত শুরু করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এদিন সিঙ্গুরে এসে বারবার আবেগতাড়িত হতে দেখা যায় মমতাকে। ফিরে যান সেই সব দিনের ইতিহাসের অলিতেগলিতে।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর