বাংলা হান্ট ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রায় সবসময়ই থাকেন খবরের শিরোনামে। এমতাবস্থায়, ৫ জুন অর্থাৎ আজ, তাঁর ৫০ তম জন্মদিনে সারা দেশজুড়েই বইছে অভিনন্দনের ঝড়। মূলত, ১৯৭২ সালের ৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন যোগী আদিত্যনাথ। যদিও, তিনি পূর্বাশ্রমে (সন্ন্যাসের আগে) জন্মদিন উদযাপন করতেন না। কিন্তু তারপরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভকামনার বন্যা বইছে। তাই, এই বিশেষ দিনে আজ আমরা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জীবনের একটি ঘটনা সকলের সামনে উপস্থাপিত করছি।
জানা গিয়েছে, যোগী আদিত্যনাথ স্কুলজীবন থেকেই বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সম্ভবত এই কারণেই হিন্দুত্বের প্রতি তাঁর আসক্তি শুরু থেকেই ছিল। পাশাপাশি, তিনি প্রায়ই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। সেই সময়ে ছাত্র পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে তৎকালীন গোরক্ষ পীঠধীশ্বর মহন্ত অবেদ্যনাথকে প্রধান অতিথি হিসাবে ডাকা হয়। ওই অনুষ্ঠানে সমগ্ৰ দেশজুড়েই বহু শিক্ষার্থী বক্তব্য রাখেন। এমতাবস্থায়, আদিত্যনাথ যখন বক্তৃতা শুরু করেন, তখন উপস্থিত সবাই প্রচুর করতালি দেন। এমনকি, তাঁর বক্তৃতা শুনে অবেদ্যনাথ মহারাজও অত্যন্ত মুগ্ধ হন।
শুধু তাই নয়, তিনি যোগী আদিত্যনাথকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি কোথা থেকে এসেছেন! তার উত্তরে আদিত্যনাথ জানান, তিনি উত্তরাখণ্ডের পাউড়ির পাঁচুর থেকে এসেছেন। এরপরেই অবেদ্যনাথ মহারাজ বলেছিলেন যে, “সুযোগ পেলে অবশ্যই দেখা করতে এসো।”
এদিকে, অবেদ্যনাথ মহারাজও উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর গ্রামও যোগীর গ্রাম থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ছিল। এমতাবস্থায়, তাঁর সাথে প্রথম সাক্ষাতেই যোগী আদিত্যনাথ অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেই সাক্ষাতের পর যোগী গোরক্ষপুরে আসেন অবেদ্যনাথ মহারাজের সঙ্গে দেখা করতে। যদিও, কিছুদিন পর তিনি আবার গ্রামে ফিরে যান।
সেখানে পৌঁছে, তিনি ঋষিকেশের ললিত মোহন শর্মা কলেজে এমএসসিতে ভর্তি হন, কিন্তু তাঁর মন সর্বদা গোরক্ষপুরে গুরু গোরক্ষনাথের উপাসনালয়ের দিকে আবর্তিত ছিল। এদিকে, ওই সময়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন অবেদ্যনাথ মহারাজ। সেই আবহে আদিত্যনাথ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তখন অবেদ্যনাথ মহারাজ তাঁকে বলেন, “আমরা রাম জন্মভূমিতে মন্দিরের জন্য লড়াই করছি। আমার এই অবস্থা, আমার কিছু হলে আমার মন্দির দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না।”
তখন যোগী তাঁকে আশ্বস্ত করে জানান যে, “আপনি চিন্তা করবেন না। আপনার কিছু হবেনা। আমি শীঘ্রই গোরক্ষপুর আসব।” তারপরেই ১৯৯২ সালে, তিনি তাঁর মাকে গোরক্ষপুর যেতে চান জানিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন। কিন্তু, তখন তাঁর মা ভেবেছিলেন যে, ছেলে হয়ত চাকরির জন্য যাচ্ছে। যদিও, তাঁর ভাবনা ছিল অন্য। আর এভাবেই যোগী আদিত্যনাথের জীবন আবর্তিত হয়েছিল।