বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘একেই বলে উন্নয়ন’, ফের বিরোধীদের তোপের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মাত্র তিনদিন হলো উদ্বেধন হয়েছে। সেই উদ্বোধন নিয়ে বিতর্ক এখনও পিছু ছাড়েনি কামারকুণ্ডু উড়ালপুলের। মাত্র তিন দিন হল শুরু হয়েছে যান চলাচল। এরইমধ্যে উঠে যাচ্ছে পিচের আস্তরণ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বর্ষা নামলে উড়ালপুলের কী অবস্থা হবে? গত ৩ জুন কামারকুণ্ডু রেল গেটের ওপর তৈরি রেল উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেমেলিয়া গ্রামে ঢাকঢোল পিঠিয়ে সন্তোষী মাতার মন্দিরে পুজো দিতে আসেন তিনি। একই সফরে উদ্বোধন করে যান ওই উড়ালপুলটিও। এবার সেই উড়ালপুল নিয়েই দানা বাঁধছে বিতর্ক ।
জানা যাচ্ছে, রেলের পক্ষ থেকে হুগলি জেলা শাসককে ওইদিনই চিঠি দিয়ে জানানো হয় রেল এবং রাজ্য যৌথ ভাবেই তৈরি করেছে ওই উড়ালপুল। তাহলে রেলকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি কেন? এই বিষয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ট্যুইট করে টাকা খরচের হিসাব দেন। উড়ালপুল নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে ৪৪.৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজ্য দিয়েছে ১৮.১৬ কোটি টাকা।
কেন্দ্র অনুদান দিয়েছে ২৬.৭০ কোটি টাকা। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ করেন ভোট পাওয়ার আশায় মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পটিকে রাজ্যের নামে চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙেছেন।
জানা যাচ্ছে, আগামী ১০ জুন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আসবেন কামারকুণ্ডুতে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন হুগলির সাংসদও লকেটও। এই বিতর্কের পরিস্থিতির মধ্যেই দেখা গেল উঠে যাচ্ছে কামারকুণ্ডু রেল উড়ালপুলের উপরের পিচই। কয়েকটি জায়গায় জড়ো হয়ে গেছে পিচ। কোথাও কোথাও আবার চার পাঁচ ইঞ্চি করে বসেও গেছে। মাত্র তিন দিনেই এই অবস্থা। তাহলে ভবিষ্যতে এই উড়ালপুলের কী দশা হবে সেই চিন্তাতেই এলাকাবাসী।
এখনও ভারী যান চলাচল শুরুই হয়নি সেভাবে। এরই মধ্যে পিচ কেন উঠে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। গরমের জন্য পিচ গলে এই অবস্থা নাকি অন্য কোনও কারণে তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রায় এক বছর তৈরি হয়ে পড়েছিল এই সেতু। উদ্বোধনের পরেই পিচ উঠে যেতে শুরু হওয়ায় সেতু আদৌও কতদিন ঠিক থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী।
রাজ্যের পূর্ত ও সড়ক দফতরের তৈরি এই উড়ালপুলের অবস্থা দেখে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিঙ্গুরের বিজেপি নেতা সঞ্জয় পান্ডে। তিনি বলেন, রাস্তা তৈরিতে তৃণমূলের নেতারা কাটমানি খাওয়ায় কাজের গুণগত মান খুবই খারাপ হয়েছে। অবিলম্বে উড়ালপুলের সমস্ত কাজ ঠিক করে তা যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত করতে হবে। তা না হলে যে কোনো সময় বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্য সুবীর মুখ্যোপাধ্যায়কে ফোনে করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।