বাংলা হান্ট ডেস্ক: গ্রীষ্মের মরশুমে রসালো আমের স্বাদ উপভোগ করতে চান সবাই। পাশাপাশি, এই সময়ে আমের সহজলভ্যতার কারণে সবাই মন ভরে আমের স্বাদ আস্বাদন করেন। এমতাবস্থায়, অবলা প্রাণীরাও বা বাদ যাবে কেন? আর সেজন্যই রাজস্থানের প্রতাপগড়ের শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালায় এক অভিনব আয়োজন করলেন সংশ্লিষ্ট আয়োজকরা।
মূলত, গরুরাও যাতে আমের রসের স্বাদ উপভোগ করতে পারে সেজন্য সেখানে একটি অনন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুধু তাই নয়, প্রায় ১১ কুইন্টাল আমের জুস তৈরি করে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে হাজারেরও বেশি গরুকে খাওয়ানো হয় সেখানে। এদিকে, বিরল এই আয়োজন দেখতে বিপুল সংখ্যক মানুষ শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালায় পৌঁছে যান এবং এই দৃশ্য উপভোগও করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান ও উৎসবের সময় গরুকে লাপসি, গুড় ও সবুজ ঘাস খাওয়ানোর প্রচলন অনেক জায়গায় রয়েছে। তবে, গরুকে আমের রস খাওয়ানোর ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম ঘটল। পরম শ্রদ্ধার সাথে প্রতাপগড়ের শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালার ব্যবস্থাপনায় শনিবার এই অনন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রথমে ১১ কুইন্টাল আমের রস তৈরি করে তা একটি চৌবাচ্চায় ভর্তি করা হয়। এরপর ওই আমের রসে শুকনো ফল যোগ করে সেখানে উপস্থিত সবাই গরুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, এই কর্মসূচি নিয়ে তরুণদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালায় ১,২০৫ টি গরু রয়েছে:
জানা গিয়েছে, জেলার সবচেয়ে বড় শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালায় মোট ১,২০৫ টি গরু রয়েছে। মূলত, কসাইখানায় যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা হয়েছে এই গরুগুলিকে। পাশাপাশি, এই গোশালাটি গোভক্ত ও পশুপ্রেমীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে পরিচালিত হয়। এছাড়াও, এই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে জনগণের পক্ষ থেকে গরুকে সবুজ ঘাস ও গুড়-লাপসি খাওয়ানোর কর্মসূচিও পালন করা হয়।
সারা জেলা থেকে এখানে গরু নিয়ে আসা হয়:
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোশালার ট্রাস্টি অরবিন্দ বলেন, “এই গোশালায় জেলার বিভিন্ন থানা থেকে গরু পাঠানো হয়। পাশাপাশি, জেলায় আরও পাঁচটি গোশালা রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় জায়গার অভাবে গরু নেওয়া যায়না। এমতাবস্থায়, সেসব গরুও এখানে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখানকার গরুরাও যাতে সাধারণ মানুষের মতো ‘আম’ খেতে পারে সেজন্য এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।”
এখানে গবাদি পশুর খাওয়ারের জন্যও বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়:
পাশাপাশি, গোশালার সঙ্গে যুক্ত জৈন সঙ্গীতজ্ঞ ত্রিলোক মোদী জানিয়েছেন, “এখানে আসার সময় কসাইখানা যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া গরুর অবস্থা খুবই খারাপ থাকে, কিন্তু এখানে আসার পর গরুর খাওয়ারের বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। তাদের খাদ্যের পাশাপাশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাওয়ার দেওয়া হয়। এর ফলে কসাইখানায় যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া গরুও এখানে প্রজনন করছে।”
এই কর্মসূচি অন্যান্য গোশালার কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গোশালায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গরু মারা যাওয়ার খবর ওই রাজ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, প্রতাপগড়ের শ্রী মহাবীর গোবর্ধন গোশালায় আয়োজিত এই ধরনের অনুষ্ঠান রাজ্যের অন্যান্য গোশালার কাছে প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।