বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলার আনাচে কানাচে কতই না প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে। কেউ কেউ সেই প্রতিভা প্রকাশের মঞ্চ পেলেও বেশিরভাগ জনই রয়ে যান আড়ালে। এদের মধ্যে একজন সুকান্ত সরদার (Sukanta Sardar)। মন্দিরবাজারে বাঁশবেড়িয়ার বাসিন্দা তিনি। তবলা, খোল কথা বলে তাঁর হাতে। আরো একটি জিনিস বাজাতে দক্ষ সুকান্ত। সেটা হল বাঁশি।
না, আলাদা করে কোনো বাদ্যযন্ত্র লাগে না তাঁর। নিজের হাত আর মুখটাই বাদ্যযন্ত্র সুকান্তর। অদ্ভূত কৌশলে হাত ও মুখের সাহায্যেই বাঁশির সুর তোলেন বাঁশবেড়িয়ার সুকান্ত। তা না দেখলে আর না কানে শুনলে বিশ্বাস করা সত্যিই কঠিন।
বহুদিন ধরেই বাঁশবেড়িয়ার বাসিন্দা সুকান্ত সরদার। ছোট থেকেই গান বাজনার প্রতি টান। প্রথম গানের শিক্ষা দাদুর কাছে। তারপর থেকে গান বাজনার প্রতি আকর্ষণ অনেক শিক্ষকের কাছেই নিয়ে গিয়েছে সুকান্তকে। কিন্তু বর্তমানে নিজের ভালবাসার সঙ্গেই আপোস করতে বাধ্য হচ্ছেন সুকান্ত।
নিউজ ১৮ বাংলা সূত্রে খবর, আর্থিক অনটনের।কারণে এখন আর সঙ্গীত শিক্ষা হয় না সুকান্তর। অবশ্য ভালবাসাকে একেবারে দূরে ঠেলে দেননি তিনি। গুরুর কাছে শিখতে পারেন না ঠিকই, কিন্তু নিজে বাড়িতে রেওয়াজ করেন সুকান্ত। তবলা বাজান, খোল বাজান আর বাঁশি তো আছেই।
পাড়ায় গানের অনুষ্ঠান হলে ডাক পড়ে সুকান্তর। পাড়ার বাইরেও নিজের প্রতিভা প্রদর্শন করেন তিনি। বাড়িতে ভর্তি সার্টিফিকেট আর মেমেন্টো। শুধু কি গান বাজনা? সমাজসেবার কাজেও যুক্ত সুকান্ত। বিনা পয়সায় রক্তদান করেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমকে সুকান্ত জানান, সমাজসেবা করতে ভাল লাগে তাঁর।
কিন্তু সার্টিফিকেট দিয়ে তো আর সংসার চলে না। স্বামীর গান বাজনা, সমাজসেবার প্রতি ঝোঁকের জন্য খুশি স্ত্রী আদরীও। ভাল কাজ করছেন স্বামী। তাই সংসারে অনটন নিয়েও মুখের হাসি মিলিয়ে যেতে দেন না তিনি। সংসারে টানাটানি চললেও রক্তদানের বিনিময়ে অর্থ নেন না সুকান্ত।
তাঁর কথায়, মানুষের স্বার্থে তিনি কাজ করছেন। আর করেও যাবেন। একটা সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখাতে চান তিনি সকলকে। তাই গান বাজনার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে সমাজসেবাও। সুকান্তর মতো প্রতিভারাও পাক প্রচারের আলো। তাঁদের মহৎ উদ্দেশ্যর সঙ্গে যুক্ত হোক আরো মানুষ, এই কামনাই রইল।