বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাণিজ্য নগরী মুম্বাই (Mumbai) থেকে এমন একটি ঘটনা উঠে এসেছে যা শুনলে যে কেউ চমকে যাবে। পুরো বিষয়টি জানার পর আপনি হতবাক যেমন হবেন তেমনি আপনার মুখে হাসি ফুটবে তা বলাই যায়।
তদন্ত করতে গিয়ে মুম্বাই পুলিশ এমন একটি ব্যাগ আবিষ্কার করেছে যাতে লক্ষাধিক টাকার সোনা ছিল। যে এই ব্যাগটি চুরি করেছিল সে আর কেউ নয়, ইঁদুর! এই ইঁদুর গুলো বড়া-পাও খেতে খুব ভালবাসত। তাহলে পুরো ব্যাপারটা কী? আসুন আমরা আপনাকে বলি।
শহরতলির দিন্দোশির বাসিন্দা সুন্দরী প্লানিবেল সোমবার পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে, তার দশ ভরি সোনার গয়না হারিয়েছে। এরপর পুলিশ তৎপর হয়ে সুন্দরীর কাছে পুরো ঘটনা জানতে চাইলে সুন্দরী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি বলেন।
সুন্দরী জানান, মেয়ের বিয়ের জন্য নেওয়া ঋণ শোধ করতে গয়নাগুলো ব্যাংকে বন্ধক রাখতে যাচ্ছিলেন। তাই বাড়িতে গহনাগুলো তুলে পলিথিনের ব্যাগে ভরে রেখে দেন, যেখানে কিছু বড়া-পাও’ও রাখা ছিল। এর পর তিনি সেই ব্যাগ নিয়ে ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর পথে সুন্দরী কিছু ক্ষুধার্ত শিশুকে দেখতে পান। তিনি তার ব্যাগ থেকে খাবারের প্যাকেটটি বের করে শিশুদের মধ্যে বিতরণ করে ব্যাঙ্কের দিকে রওনা দেন।
এই সময়, তিনি লক্ষ্য করেননি যে তার অলঙ্কারগুলিও একই ব্যাগে ছিল যা তিনি ক্ষুধার্ত শিশুদের দিয়েছিলেন। ব্যাঙ্কে পৌঁছে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারলেন যে খাবারের প্যাকেজের পরিবর্তে তিনি ১০ ভরি সোনার অলঙ্কার একটি ব্যাগ শিশুদের হাতে দিয়েছেন।
এরপর সুন্দরী দ্রুত সেখানে পৌঁছে যান যেখানে তিনি শিশুদের খাবারের ব্যাগ দিয়েছিলেন, কিন্তু শিশুরা সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। দিশেহারা হয়ে তিনি পুলিশের কাছে যান। এরপর পুলিশ দুই ছেলেকে খুঁজে বের করে। কিন্তু ছেলেরা জানায়, বড়া-পাও বাসি ছিল বলে তারা ব্যাগটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। তবে ব্যাগটি ডাস্টবিনে কোথাও পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকার সিসিটিভি খতিয়ে দেখে পুলিশ।
ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভি থেকে জানা যায়, সুন্দরীর দেওয়া ব্যাগটিকে আবর্জনা বলে ভুল বুঝে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। কিছুক্ষণ পরে ফুটেজে দেখা যায় যে থলিটি নিজেই পিছলে যাচ্ছে এবং তারপর রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেছে। পুলিশের অনুমান, এটা ইঁদুরের কাজ, যারা বড়া-পাও’র গন্ধে থলি টেনে তাদের গর্তে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর পুলিশ তৎপরতা দেখিয়ে নর্দমার ও আশেপাশে কিছু লোককে ডেকে তদন্তের জন্য ইঁদুরের বাসা খুঁজতে থাকে।
অবশেষে ব্যাগটি পাওয়া যায়। ভিতরে অলংকারগুলো নিরাপদ ছিল কিন্তু বড়া-পাও ছিল না। এরপর পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিযোগকারিণী। কারণ ব্যাগ না পেলে তার লাখ লাখ টাকা লোকসান হত।