বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুর্নীতি, তোলাবাজি আর সেই সঙ্গে প্রত্যন্ত এলাকায় ঘাসফুলের নেতাদের উপর সাধারণ মানুষের একাধিক অভিযোগের ঘটনা বারবার প্রকাশ্যে আসছে। এবার জমির ফসল কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের পিরোজপুর এলাকা।
কয়েক মাস আগে সেখানে পদ্মা নদীর চরে কয়েকশো বিঘা জমিতে পার্শ্ববর্তী গ্রামের কয়েকশো কৃষক চাষ করেছিলেন কলাই ও খেসারির ডাল। জমির ফসল উৎপন্ন হওয়ার পর নদীরচরের জমির মালিকানা দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতেই সেই দ্বন্দ্ব মীমাংসা করার জন্য হাজির হন কয়েকজন তৃণমূল নেতা। এবার সেইসব নেতাদের বিরুদ্ধেই সেই ফসল নিয়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ করলেন বহু কৃষক।
সম্প্রতি ৬২ জন কৃষক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তারা জানিয়েছেন, ৯ মাস আগে তাঁরা বাজিতপুর ও পিরোজপুর মৌজার চরে ৩৫০ বিঘা জমিতে কলাই ও ৩২ বিঘা জমিতে খেসারির ডালের চাষ করেছিলেন। সম্প্রতি সেই ফসল কিছু তৃণমূল নেতা ‘বিতর্কিত জমির’ বিতর্ক থামানোর নাম করে চড়া দামে কেটে বিক্রি করে প্রচুর লাভ করলেও তাদের মত চাষীদের ভাগ্যে জুটেছে নামমাত্র কিছু টাকা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই জমিতে প্রায় ৭০০ কুইন্টাল কলাই ও সাড়ে সাত হাজার কেজি খেসারির চাষ হয়েছিল। অভিযোগকারী কৃষকদের দাবী, ফসল বিক্রি করে সেই নেতারা কোটিপতি হলেও তাদের পকেটে কানাকড়ি না জোটায় তারা বাধ্য হয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন জেলাশাসক, জঙ্গিপুর পুলিশের। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন।
এই বিষয়ে রঘুনাথগঞ্জ ২ এর তৃণমূল সভাপতি সমিরুদ্দিন বিশ্বাস এখনও পর্যন্ত মৌন রয়েছেন।মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ বজলুর রহমান জানিয়েছেন, “বহুদিন ধরে ওই জমি গুলো কিছু কৃষক বেআইনি ভাবে দখলে রেখেছিল। তার ফলে জমির প্রকৃত মালিকেরা ফসল ফলাতে পারছিলেন না। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী প্রকৃত জমির মালিকদের হাতে ফসলের টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেসের এরূপ মন্তব্যকে কটাক্ষ করে মুর্শিদাবাদের বিজেপি নেতা ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “এই ঘটনার পিছনে সরাসরি তৃণমূলের এক মন্ত্রী জড়িত। আমি জেনেছি যে ১৫/১৬ জনকে বিঘাপ্রতি ২০০০ টাকা করে দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে বলা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। কিছু তৃণমূল নেতারা যেভাবে গরীবের টাকা লুট করছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”