ত্রিপুরায় চার আসনেই জমানত জব্দ তৃণমূলের, উঠে এল এই ভরাডুবির পিছনে একাধিক কারণ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ত্রিপুরায় জমি শক্ত করতে কোনরকম ত্রুটি রাখেনি তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুলের ঝড় তুলতে পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটিতে বারংবার ছুটে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৃণমূলের একাধিক নেতা, নেত্রীদের ত্রিপুরায় পরপর কর্মীসভাও কোনরকম ছাপ ফেলতে পারেনি ভোট বাক্সে। ত্রিপুরায় পৌরসভা নির্বাচনে একেবারে আশানুরূপ ফল হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরার আসন্ন দুটি নির্বাচনকে ঘিরেও ঘাসফুল শিবিরকে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আসন্ন দুটি নির্বাচনী তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ২০২৩ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন এবং চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন।

এবার চলুন, আলোচনায় আসা যাক ত্রিপুরায় বর্তমানে কেমন অবস্থা রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। ত্রিপুরায় গত পৌরসভা নির্বাচনে রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। চারটি কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতেই তৃণমূল রয়েছে চতুর্থ স্থানে‌। সেখানে তৃণমূলের ভোট বাক্স পড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ ভোট। সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তেইশের ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে পর্যুদস্ত করা যথেষ্ট কঠিন বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ফলত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা থেকে একজন সাংসদকে জিতিয়ে আনা তৃণমূলের সাপেক্ষে বড়ই কঠিন কাজ।

কিন্তু এবার প্রশ্ন আসতে পারে ত্রিপুরার গত পুরভোট কে পাখির চোখ করে রাখার পরেও কেন তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে পড়ল। সেক্ষেত্রে, রাজনীতির অঙ্ক বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুস্মিতা দেব, শত্রুঘ্ন সিনহা–সহ হেভিওয়েট নেতা–নেত্রী প্রচার করালেও তাদের মধ্যে কেউই ত্রিপুরার বাস্তবিক সমস্যাটাকে তুলে ধরতে পারেননি। এর পাশাপাশি, ত্রিপুরার পুরভোটকে কেন্দ্র করে সেখানে কর্মীসভাগুলিতে বাংলা নেতা-নেত্রীদের আধিক্য থাকলেও ত্রিপুরা স্থানীয় তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের সংখ্যা ছিল একেবারেই হাতেগোনা। এছাড়াও, হাতে সময় অত্যন্ত কম থাকার জন্য আইপ্যাক শেষ মুহূর্তে ময়দানে নামলেও জেলার কোণায় কোণায় পৌঁছতে পারেনি। ফলে সব মিলিয়েই ত্রিপুরার মাটিতে ঘাসফুল ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সেখানে তৃণমূলের জামানতও জব্দ হয়েছে।

tmc flag 759

ত্রিপুরায় তৃণমূলের বর্তমান অবস্থার উপর ভিত্তি করে তৃণমূল কংগ্রেসকে নির্ণায়ক শক্তিতে পরিণত করতে গেলে সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। মানুষের পাশে থেকে মানুষের অভাব অভিযোগ শোনার সাথে সাথে প্রয়োজনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে, ত্রিপুরায় ঘাসফুল শিবিরকে সবার আগে জায়গা করে নিতে গেলে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনই একমাত্র পথ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর