বাংলাহান্ট ডেস্ক : এসেছিলেন অমর্ত্য রিসার্চ সেন্টারের (Amartya Sen Research Centre) উদ্বোধনে। কিন্তু ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। সল্টলেকে প্রতীচী ট্রাস্ট আয়োজন করেছিল এই অনুষ্ঠান। উদ্বোধন করলেন অমর্ত্য রিসার্চ সেন্টারের। তারপর ‘ব্যাক টু স্কুল’ (Back to School) শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিলেন তিনি। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনিতা রামপাল, জিন ড্রিজ, কে শ্রীনাথ রেড্ডি ও একে শিবকুমার।
কী বলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ?
সল্টলেকের এই অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন অমর্ত্য সেন। ভারতে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐকবদ্ধতার ইতিহাসকে স্মরণ করান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি উদহারণ তোলেন প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের। সেখানেই উঠে আসে আল বিরুনি থেকে আর্যভট্টের কথা। তিনি বলেন, ভারতের বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে রয়েছে এক সমন্বয়ের ঐতিহ্য। তিনি প্রসঙ্গ টানেন বৈদিক অঙ্ক শাস্ত্রেরও। এখানেও তিনি ঐতিহ্য ও ঐক্যের কথাই তুলে ধরেন।
এরপরই অমর্ত্য সেন বলেন বর্তমান ভারতের কথা। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কি কিছু নিয়ে ভীত, তাহলে আমি বলব আমার ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন কিছুও আছে! আমি বলব যে, হ্যাঁ, এখন ভয় পাওয়ার কারণ আছে বৈকি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিই আমার কাছে এখন ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার মানেই আমি জাতীয়বাদী মানসিকতার এমন কিন্তু নয়। তবে আমিও চাই, আমার দেশ বিভক্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকুক। ঐতিহাসিক ভাবে উদার ছিল এমন একটি দেশে ধর্মীয় বিভেদ তৈরি হোক তেমনটা আমি চাই না। তাই আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তবে এটি কিন্তু শুধু সহিষ্ণুতার প্রশ্ন নয়।
শুধু সহিষ্ণুতা নয় দরকার ঐক্যের
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের শ্রেষ্ট কীর্তিগুলি যে শুধু মাত্র সহিষ্ণুতারই দান, এমনটা কিন্তু একদমই নয়। ভারতের সহিষ্ণুতার ইতিহাসও অনেক প্রাচীন। ভারতে একের পর এক জিউরা এসেছে, খ্রিস্টানরা এসেছে, তার পর আরও অনেকে এসেছে ভারতে। আমরা বরাবরই সহিষ্ণু ছিলাম। তাই সহিষ্ণুতার ইতিহাস আমাদের আছেই। কিন্তু এখন তার থেকেও অনেক বেশি দরকার ঐক্যের। মানুষকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। এই বিষয়টি সবায়ের আগে বোঝা দরকার।