বাংলাহান্ট ডেস্ক : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তরুণ তুর্কিদেরকেই সামনে এনেছিল বামফ্রন্ট। প্রকাশ্যে এসেছিল এক ঝাঁক নতুন মুখ। লাল পতাকা হাতে নিয়ে প্রচারের ময়দানেও রীতিমতো ঝড় তুলেছিল তিন কন্যে। বালিতে দীপ্সিতা ধর, জামুড়িয়ায় ঐশী ঘোষ এবং নন্দীগ্রামে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বিরোধীদেরকে কাবু করতে তাদের অস্ত্র ছিল ঢালাও প্রতিশ্রুতির আশ্বাস। কিন্তু ভোট পর্ব মিটতে না মিটতেই উধাও হয়ে গেলেন বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে সদ্য পা রাখা বামেদের এই তিন কন্যে। মীনাক্ষী আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কিছুটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করলেও রাজনীতির আয়না থেকে বেশ খানিকটা দূরে সরে গিয়েছেন ঐশী, দীপ্সিতা। এক কন্যে পড়ানোর কাজে ব্যস্ত, অন্যজনের লক্ষ্য এখন শুধুই এমফিল। দু’জনেই আপাতত দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত। ফলত, রাজনীতির আঙিনায় দীপ্সিতা আর ঐশীর বর্তমান অবস্থান নিয়েই রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দীপ্সিতার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে গুঞ্জন শুরু হতেই তার দাবি, তিনি ভোটের পরেও কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নিজের এলাকায় কাজ করেছেন। দিল্লি থেকে দীপ্সিতা বললেন, ‘‘আমাদের তো নির্বাচন অনুযায়ী কোন সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয় না। ফলে আমি যখন প্রার্থী হয়েছিলাম, তখন সেখানকার গণসংগঠনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের পরামর্শেই কাজ করেছি।” শুধু তাই নয়, তিনি বাংলা বা দেশে সর্বভারতীয় ছাত্র সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছেন বলেও উল্লেখ করেন। তার কথায়, “প্রার্থী করা হয়েছিল বলেই সেখানে গিয়ে আমি নেতৃত্বকে কোনও নির্দেশ দেব, সেটা তো আমাদের দলে হয় না।” তবে জুলাইয়ে বাংলায় ফিরে বালিতে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন নেত্রী। একই সুর ঐশীর গলাতেও। তার কথায়, ‘জামুড়িয়ায় লড়াইয়ের পর বেশ কিছুদিন রেড ভলান্টিয়ার হিসাবেও কাজ করেছি ওখানে। তার পরে গবেষণার জন্য দিল্লি চলে আসায় সকলের সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। তবে যত বার বাড়ি গিয়েছি, তত বারই জামুড়িয়ায় গিয়ে থাকার চেষ্টা করেছি।’ এর পাশাপাশি, জামুরিয়াবাসীর প্রয়োজনে তিনি তাদের সাথে থাকেন এবং পরামর্শ দিন বলেও উল্লেখ করেন ঐশী। ঐশীর আরোও সংযোজন, “লেখাপড়া দ্রুত শেষ করে ওখানে যাব। যেখানে কাজটা ছেড়ে এসেছিলাম, সেখান থেকে যেন শুরু করতে পারি।’’
প্রবীণ সিপিআইএমের নেতা মহম্মদ সেলিম অবশ্য প্রচ্ছন্নভাবে দীপ্সিতা ঐশীকেই সমর্থন জানাচ্ছেন। তার মতে, “সকলেই যে একই কাজ করবেন, তা তো নয়! আমরা স্টাডি অ্যান্ড স্ট্রাগলের কথা বলি। তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। কেউ গান বাঁধছেন, কেউ নাটক করছেন, কেউ ক্যান্টিন চালাচ্ছেন, কেউ রেড ভলান্টিয়ার্সের কাজ করছেন। ঐশী, দীপ্সিতারা লেখাপড়া করছেন। সেটাও তো প্রয়োজনীয়।”
এর পাশাপাশি সেলিম ‘মিশন ৩৬০ ডিগ্রী’র কথাও বলেন। সকলকে নিয়ে কাজ করাই সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকের ‘মিশন ৩৬০ ডিগ্রী’ পরিকল্পনা। তবুও গ্রামেগঞ্জে নানা বাধা, প্রতিকূলতার মধ্যেও তরুণদের নিয়ে কাজ করার আশা রাখছে গান সংগঠন।