যুদ্ধে আকাশ থেকে শত্রুদের উপর করবে মৃত্যুবৃষ্টি! বায়ুসেনা পেতে চলেছে এই দুর্ধর্ষ “শিকারী”কে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আগামী বছর থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফের শক্তিবৃদ্ধি ঘটবে। জানা গিয়েছে, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) ২০২৩ সাল থেকে দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজস Mk-1A-এর সরবরাহ শুরু করবে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে, পুরো ৮৩ টি যুদ্ধবিমান বিমান বাহিনীর হাতে আসবে। যেগুলির মধ্যে ৭৩ টি তেজস Mk-1A ফাইটার এবং ১০ টি ট্রেনার বিমান থাকবে। শুধু তাই নয়, পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী, ৪০ টি তেজস Mk-1 বিমানের সরবরাহও ২০২৩ সালের মাঝামাঝি শেষ হবে বলে জানা গিয়েছে।

ভারতীয় বিমান বাহিনী এখনও পর্যন্ত ২৫ টি তেজস Mk-1 যুদ্ধবিমান পেয়েছে:
এখনও অবধি, ভারতীয় বিমান বাহিনী চুক্তিবদ্ধ ৪০ টি তেজস Mk-1-এর মধ্যে ২৫ টি হাতে পেয়েছে। এমতাবস্থায়, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ১১ টি ট্রেনার বিমানের প্রথম সরবরাহ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি চারটি বিমান ২০২৩ সালের মাঝামাঝি নাগাদ IAF-কে সরবরাহ করা হবে। জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে যুদ্ধবিমানগুলির বর্তমান বহর ৩১ স্কোয়াড্রনের নিচে রয়েছে। সেই কারণেই “মেক ইন ইন্ডিয়া” উদ্যোগের অধীনে স্কোয়াড্রন বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, বায়ু সেনা পর্যায়ক্রমে LCA ভেরিয়েন্ট, MRFA এবং AMCA-এর মাধ্যমে স্কোয়াড্রনের ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করছে।

২০৩০ সালের মধ্যে আরও ৮ স্কোয়াড্রন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে:
মূলত, ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি স্কোয়াড্রনে ১৬ টি যুদ্ধবিমান এবং দু’টি পাইলট প্রশিক্ষণের বিমান অন্তর্ভুক্ত থাকে। বর্তমানে, ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে ৩০ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান রয়েছে। যেখানে “দুই সম্মুখ যুদ্ধ” প্রস্তুতির জন্য কমপক্ষে ৩৮ স্কোয়াড্রন থাকতে হবে। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে আরও ৮ স্কোয়াড্রন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাহিনী। নতুন ৮ স্কোয়াড্রনের ৭৫ শতাংশ দেশীয় এলসিএ এবং পঞ্চম প্রজন্মের অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট দিয়ে সম্পন্ন করা হবে। এমতাবস্থায়, LCA Mk-1-এর ৪০ টি বিমান ইতিমধ্যেই HAL-কে অর্ডার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ টি বিমান গৃহীত হয়েছে এবং বায়ু সেনার কাজেও লাগছে।

করা হবে ৪৩ ধরণের উন্নতি:
এই ৪০ টি বিমানে, LCA Mk-1A-এর তুলনায় ৪৩ ধরনের উন্নতি করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে এয়ার-টু-এয়ার রিফুয়েলিং, দূরপাল্লার ক্ষেত্রে বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন, শত্রুর রাডার এবং ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার জন্য উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা। জানা গিয়েছে, HAL পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী ৩২ টি জেটের অ্যাসেম্বলের কাজ শেষ করার পর সিঙ্গেল সিটার তেজস মার্কেট জেটের উৎপাদন থামিয়ে ১৮ টি ডবল সিটার ট্রেনার ভেরিয়েন্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

এর মধ্যে ৮ টি ট্রেনার জেট প্রথম অর্ডার থেকে রয়েছে এবং পরবর্তী ১০ টি অ্যারো ইন্ডিয়ার সময় ৮৩ টি বিমানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অর্ডারের মধ্যে রয়েছে। এগুলি ২০২৪ সালের মার্চ থেকে বিমান বাহিনীতে সরবরাহ করা হবে এবং ২০২৮-২৯ সালের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। Tejas Mk-1A যুদ্ধবিমানে ডিজিটাল রাডার সতর্কতা রিসিভার, একটি বাহ্যিক ECM পড, একটি স্ব-সুরক্ষা জ্যামার, AESA রাডার, রক্ষণাবেক্ষণের সহজলভ্যতা সহ এভিওনিক্স, অ্যারোডাইনামিকস ও রাডারে উন্নতি করা হচ্ছে।

TEJAS

এছাড়াও, তেজস Mk-1-এ উন্নত স্বল্প পরিসরের এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং Astra Mk-1-এ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইলের সুবিধা উপলব্ধ হবে। পাশাপাশি, এই ১২৩ টি তেজস Mk-1 এবং Tejas Mk-1A দিয়ে ৬ টি স্কোয়াড্রন গঠন করা হবে। উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই ভারতীয় বিমান বাহিনী তেজসের জন্য দু’টি স্কোয়াড্রন “ফ্লাইং ড্যাগার” এবং “ফ্লাইং বুলেট” গঠন করেছে। তেজস মার্ক-1A যুদ্ধবিমানের প্রথম স্কোয়াড্রন গঠিত হবে গুজরাটের নালিয়াতে এবং দ্বিতীয়টি রাজস্থানের ফলোদি বিমানঘাঁটিতে। এই দু’টি অঞ্চলই পাকিস্তান সীমানার খুব কাছে অবস্থিত।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর