“ভালো নম্বর দেওয়ায় জন্য আমরা টাকা নেবো”, শিক্ষকের ভাইরাল ভিডিও দেখে অবাক সবাই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের সমাজে শিক্ষকদের ভূমিকা হল অপরিসীম। কারণ, তাঁদের হাত ধরেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম আলোকিত হয়ে শিক্ষার আলোয়। যার ওপর ভর করে এগিয়ে চলে সমাজ এবং সভ্যতা। আর সেই কারণেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলা হয় “জাতির মেরুদন্ড”। কিন্তু, বর্তমান সময়ে মাঝে-মধ্যেই এমন কিছু ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে আসে যেগুলিতে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় শিক্ষকদের ভূমিকা। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার ঠিক সেইরকমই এক ঘটনার দৃশ্য সামনে এসেছে।

মূলত, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেওয়ার জন্য এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিহারের লক্ষীসরাইয়ের একটি কলেজে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষকের সঙ্গে এক ছাত্রনেতার তুমুল বাকবিতণ্ডাও হয়। যেটির একটি ভিডিও পরবর্তীকালে সামনে আসে সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে। যেখানে ওই অভিযুক্ত অধ্যাপককে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, “আমরা টাকা নিতেই পারি, তুমি এই বিষয়ে কথা বলার কে?” পাশাপাশি, তাঁকে গায়ে হাত তুলতেও দেখা যায়। এমতাবস্থায়, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, লক্ষীসরাইয়ের নয়াবাজারে অবস্থিত আরলাল কলেজে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। এমতাবস্থায়, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার ঘটনায় গত শনিবার কলেজে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি বিএ পার্ট-১ ও পার্ট-২-র পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ওই পরীক্ষার প্র্যাকটিক্যাল আগামী ৭ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত হওয়ার কথা। এদিকে, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার ফাঁকে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে সাতশ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে।

পাশাপাশি, এই টাকা নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রসিদও দেওয়া হচ্ছিলনা পড়ুয়াদের। এদিকে, এই তথ্য পেয়ে এবিভিপি কর্মীরা তাঁদের  বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য মনীশ কুমারের সাথে সেখানে পৌঁছে যান। পাশাপাশি, মণীশ কুমার প্র্যাকটিক্যাল রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপককে টাকা নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এমনকি, একটা সময়ে তিনি ওই এবিভিপি কর্মীকে ধাক্কা দিয়ে বেরও করে দেন। পাশাপাশি, তিনি বলতে থাকেন “টাকা নেওয়া হতেই পারে। তুমি কে কথা বলার? তোমরা পরীক্ষায় কারচুপি করতে এসেছ।”

এমতাবস্থায়, কয়েকজন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি দু-একজন অভিভাবকও জানান যে, তাঁরাও প্র্যাকটিক্যালের জন্য পাঁচশো ও দু’শো টাকা দিয়েছেন। এমনকি, তাঁরা কোনো রসিদ পাননি বলে জানান। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেওয়া হবে বলেও অভিযোগ জানান তাঁরা। এদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের অধ্যক্ষ রামশরণ মাহাতো জানিয়েছেন যে, তিনি এই ধরনের তথ্য জানেন না। পাশাপাশি, কেউ টাকা নিলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর