বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছিলেন অপরাধ। তবে, গ্রামের সালিশি সভায় নিজের মুখে কৃতকর্মের বিষয়ে অনুশোচনা করলেও শেষ পর্যন্ত রেহাই মিললো না। সভায় হাজির সকলের সামনেই এক ব্যক্তিকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হল। আর সেই মর্মান্তিক মৃত্যুর দৃশ্য কার্যত দাঁড়িয়ে থেকে নিজের চোখে দেখলেন সভাস্থলে উপস্থিত সদস্যরা। শনিবার এমন ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী থাকল অসমের নগাঁও জেলার বর লালুং এলাকা।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম রনজি বরদোলোই। শনিবার সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে দৌড়ে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে, ততক্ষণে সব শেষ! ‘অপরাধী’কে শাস্তি দেওয়ায় নামে তার দেহকে পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। শেষ পর্যন্ত, ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া মৃত ব্যক্তির দেহ বহু কষ্ট করে মাটি খুঁড়ে বের করে পুলিশ। নগাঁওয়ের এসডিপিও এম দাসের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই ঘটনায় আপাতত বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে, গত বুধবার এমন ভয়াবহ বিচারের আড়ালে থাকা ঘটনার সূত্রপাত হয়। কিন্তু, এখন প্রশ্ন হল ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল ? সূত্রের খবর, হঠাৎই বর লালুং গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায় এক সদ্য বিবাহিতার মৃতদেহ। এরপরেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তীব্র চাঞ্চল্য। একই সঙ্গে গ্রামেরই কয়েক জন ব্যক্তির কানে আসে, নিহত মহিলার শাশুড়িই তার পুত্রবধূর হত্যার সঙ্গে জড়িত আছেন। গৃহবধূর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই গ্রামের প্রধানের কানে পৌঁছয় বিষয়টি।
এরপরেই প্রধানের নির্দেশে এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে কারবি সম্প্রদায় অধ্যুষিত গ্রামটিতে একটি সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ওই মহিলাকে খুনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনিই বলেন, “সদ্য বিবাহিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন রনজি।” তৎক্ষণাৎ রনজি’র কাছে বিষয়টি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সে সালিশি সভায় খুনের কথা স্বীকার করেন। তার পরই গ্রামবাসীদের আক্রোশের শিকার হয় অভিযুক্ত। আর তার জেরেই গ্রামবাসীদের ভয়ঙ্কর শাস্তির সামনে পড়ে মৃত্যু হয় তার।