বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিপিএম (CPIM) ছাত্রনেতা আনিস খানের( Anish Khan) রহস্যজনক মৃত্যু গোটা বাংলায় বিতর্ক সৃষ্টি করে। আমতার বাসিন্দা এই ছাত্রনেতার মৃত্যুতে পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলের জড়িত থাকার অভিযোগ করতে থাকে বিরোধী দলগুলি। এমনকি এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বহু সংখ্যক পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। পরবর্তীতে এর তদন্তভার পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিটের (SIT) হাতে তুলে দেওয়া হয় আর এই ঘটনার চার মাসেরও বেশি সময় বাদে অবশেষে চার্জশিট জমা করলো সিট। চার্জশিটে কি উল্লেখ করল তদন্তকারী দল?
প্রসঙ্গত, আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর পর গোটা বাংলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পড়ুয়া থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকরা সকলেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। গভীর রাতে আনিসের বাড়িতে পুলিশের আচমকা হাজির হওয়া এবং পরবর্তীতে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যু যথেষ্ট রহস্যের সৃষ্টি করে। এমনকি বিরোধীরা এক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন এবং শাসক দলের জড়িত থাকার সম্ভাবনা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে আনিসের পরিবারের তরফ থেকে সিবিআইকে তদন্ত দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করা হলেও কলকাতা হাইকোর্ট দ্বারা সিটের ওপরেই ভরসা রাখা হয়। যার পর এদিন অবশেষে উলুবেরিয়া আদালতে চার্জশিট পেশ করলো তারা।
এক্ষেত্রে প্রথম থেকেই একাধিক প্রশ্ন ঘোরে সকলের মাথায়। যেমন আনিস খানের মৃত্যু আসলে কিভাবে হয়েছিল কিংবা রাতে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়েছিলই বা কেন? এ সকল প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করতে থাকে গোটা বাংলায়। তবে এদিন পেশ করা চার্জশিটে খুনের সকল জল্পনা উড়িয়ে দিল সিট। তাদের দাবি, “খুন হননি আমতার ছাত্রনেতা আনিস খান।”
উল্লেখ্য, আনিস খান মৃত্যু মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় প্রথমে নাম ছিল আমতা থানার তৎকালীন ওসি দেবব্রত চক্রবর্তীর নাম। পরবর্তীতে সিভিক পুলিশ এবং এলাকার হোমগার্ডকেও গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, সিটের দ্বারা পেশ করার চার্জশিটে এদিন আমতা থানার ওসি দেবব্রত চক্রবর্তী, এএসআই, দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ হোমগার্ডের নাম রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে খুনের সকল জল্পনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানত পুলিশের গাফিলতির জেরে এই মৃত্যু হয়েছে বলেই মত সিটের।
উলুবেড়িয়া আদালতে পেশ করা এই চার্জশিটে ছাত্রনেতার বাড়িতে পুলিশে যাওয়ার কারণটিও উল্লেখ করা হয়েছে। তৎকালীন সময় হিজাব বিতর্ক নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিল আনিস খান এবং সেই নিয়ে বিতর্কের জেরেই খুনের রাতে তার বাড়ি যায় পুলিশ। তবে সিটের এই চার্জশিটের পরে অবশ্য খুশি নয় আনিসের পরিবার। তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে তাদের পদক্ষেপ কি হয়, সেটাই দেখার।