বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাবিশ্ব অজস্র সব রহস্যে পরিপূর্ণ রয়েছে। আর সেই রহস্যগুলির উদঘাটনের জন্যই একের পর এক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি, সাধারণ জনমানসেও এই সম্পর্কে কৌতূহলের শেষ নেই। এমতাবস্থায়, সম্প্রতি উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে নাসার (NASA) বিজ্ঞানীরা মহাকাশে এমন কিছু দেখেছেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
মূলত, নাসার হাতে এসেছে মহাবিশ্বের এক অনন্য ছবি। জানা গিয়েছে, নাসার নতুন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের প্রথমদিকের সবচেয়ে সুস্পষ্ট, পরিষ্কার এবং রঙিন ইনফ্রারেড ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে, ওই ছবিটিতে সম্ভবত ১৩ বিলিয়ন বছর আগের মহাবিশ্বের ছবি ফুটে উঠেছে।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক প্রকাশিত এই ছবিতে অগণিত তারা এবং হাজার হাজার আকাশগঙ্গা দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, সেটিতে একটি খুব দূরবর্তী ক্ষীণ ছায়াপথের ঝলকও দৃশ্যমান রয়েছে। সর্বোপরি, ওই ছবিতে আমাদের সৌরজগতের বাইরেও একটি বিশাল গ্যাসীয় গ্রহ এবং নীহারিকার (নেবুলা) ছবি রয়েছে। উল্লেখ্য যে, নেবুলা হল সেই জায়গা যেখানে তারার জন্ম এবং মৃত্যু হয়। এছাড়াও, ৫ টি ঘন আকাশগঙ্গাকে একে অপরের চারপাশে দেখা গিয়েছে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই প্রথম এমন একটি ছবি সামনে এসেছে যেখানে এত দূরের এবং এত পূর্বের ছবি দেখা গিয়েছে। মূলত, ওই টেলিস্কোপটি ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে বিগ ব্যাং-এর পরে যে আলো বেরিয়েছিল তার কিছু অংশ ধারণ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, ১০ বিলিয়ন ডলারের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা এই ছবিটির নাম দেওয়া হয়েছে “ডিপ ফিল্ড”। এই ছবিটি তুলতে টেলিস্কোপের সময় লেগেছে ১২.৫ ঘন্টা। এমতাবস্থায়, এই ছবি মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস টেলিস্কোপ। এটি গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রেঞ্চ গায়ানা থেকে চালু করা হয়। গত জানুয়ারিতে, এটি পৃথিবী থেকে ১.৬ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে পৌঁছেছিল। সেখানে গিয়ে এর যন্ত্রপাতি চালু করা হয়। এটিতে একটি ২১-ফুট সোনা আবৃত ফুলের মত দেখতে আয়না রয়েছে। যা মহাকাশে পাঠানো সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে সংবেদনশীল আয়না। এটির মোট ১৮ টি সেগমেন্ট রয়েছে।
It's here–the deepest, sharpest infrared view of the universe to date: Webb's First Deep Field.
Previewed by @POTUS on July 11, it shows galaxies once invisible to us. The full set of @NASAWebb's first full-color images & data will be revealed July 12: https://t.co/63zxpNDi4I pic.twitter.com/zAr7YoFZ8C
— NASA (@NASA) July 11, 2022
এই প্রসঙ্গে জেমস ওয়েবের ডেপুটি প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট জনাথন গার্ডনার জানান, “এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে আমরা কয়েক বিলিয়ন বছর পেছনে ফিরে যেতে পেরেছি। এটি সম্ভব হয়েছে কারণ সেইসকল আকাশগঙ্গা থেকে নির্গত আলো আমাদের টেলিস্কোপে পৌঁছতে বিলিয়ন বছর সময় নেয়। এখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই আকাশগঙ্গাগুলির কত বয়স তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। মহাবিশ্বের অনন্য জিনিসের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টাও বজায় থাকবে। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব সৌরজগত সম্পর্কেও নতুন তথ্য পাওয়া যাবে।”