বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিককালে বাংলায় তৃণমূল সরকারের একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে চলেছে কোটি কোটি মানুষ। স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) থেকে শুরু করে কন্যাশ্রী এবং দুয়ারে রেশনের মতো একাধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে সরকার। এর মাঝেই আবার কেন্দ্রের নাম ব্যবহার করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের খাতে অর্থ সরবরাহ বন্ধ করেছে কেন্দ্র সরকার, যা নিয়ে বর্তমানে ঋণের বোঝা ক্রমশ বেড়ে চলেছে রাজ্য সরকারের। এর মধ্যেই আবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে জিএসটির (GST) অন্তর্ভুক্তি তাদের চিন্তা আরও বহু অংশের বৃদ্ধি করল।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সূচনা যখন গোটা রাজ্য জুড়ে করা হয়, তখন এক্ষেত্রে জিএসটির কোন চিন্তা ছিল না। তবে বর্তমানে করের বোঝা যুক্ত হওয়ায় খরচ যে অনেকাংশে বাড়বে, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা। এমনকি এই খরচ কয়েকশো কোটি টাকা বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কয়েক কোটি মানুষকে সুবিধা প্রদান করার বিষয়টি প্রধান সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, স্বাস্থ্যসাথীর জন্ম লগ্নে সীমিত কিছু মানুষের জন্য এই সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হতো, তবে বর্তমানে গোটা বাংলায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পভুক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় দু কোটি ৩২ লক্ষ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই খাতে প্রতিবছর সরকারের ২৫০০ কোটি টাকার (2500 Crore Indian Rupee) মতো খরচ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে কেবিন ভাড়া বাবদ ৫ শতাংশ এবং মেডিকেল বর্জ্যপদ্ধতিতে ১২ শতাংশ কর বসানো হলে সেই খরচ কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে, তা ভেবেই রাতের ঘুম উড়েছে অনেকের।
অন্যদিকে, জিএসটি বৃদ্ধি পেলেই সেই খরচ 125 কোটি বাড়তে পারে বলে মত অর্থকর্তাদের। এই প্রসঙ্গে প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “যদি কারোর স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকে, তবে তিনি যে কোন স্থানে চিকিৎসা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন হাসপাতাল যদি সেই নিয়ম না মানে, তাহলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে বর্তমানে যেভাবে জিএসটির জন্য খরচ বাড়তে চলেছে, তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” অপরদিকে তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “মানুষের ওপর করের বোঝা চাপানো উচিত নয়। যেভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং অন্যান্য একাধিক দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে, তা কমাতে হবে।”
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বীমা এবং নিশ্চয়তা, এই দুই ভিত্তিতে সকল খরচ প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে করের বোঝা চাপলে সবদিক থেকেই অস্বস্তি বাড়তে পারে মানুষের। এর মাঝেই সরকার অবশ্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।
সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় যে, গুরুতর অবস্থায় বাংলায় চিকিৎসা যদি না হয়, তবেই ভেলোরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবে মানুষ এবং সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথীর সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে নয়। তবে এ সকল পদক্ষেপ সত্ত্বেও কয়েকশো কোটি টাকার খরচ বৃদ্ধি পেলে সরকার কিভাবে তার মোকাবিলা করে, সেটাই দেখার।