বাংলাহান্ট ডেস্ক : চোরেদের কি মন থাকতে নেই? আজব চুরি দুই ‘সহৃদয়’ চোরে। প্রথমে ধারাল অস্ত্র হাতে নিয়ে বাড়িতে ঢোকে। তারপর গৃহকর্তার গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে লুঠ করে টাকাপয়সা। আবার বেরনোর আগে সহানুভূতি জেগে ওঠে তাদের। গৃহকর্তার হাতে আগামী দিনের বাজার করার টাকা হিসাব করে দিয়ে যায় চোর। যাওয়ার আগে আবার ঢিপ করে পা ছুঁয়ে প্রণামও করে গেল। চোরে কাণ্ড দেখে মাথা চুলকাচ্ছেন খোদ গৃহকর্তাই। ঘটনায় শোরগল ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে (Farakka Theft)।
মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ফারাক্কায় (Farakka) এমনই এক অভিনব চুরির ঘটনা ঘটেছে। ফারাক্কা ব্যারেজ আবাসনে চুরি করতে ঢোকে দুই চোর। আবাসনের বাসিন্দা হরিশচন্দ্র রায়ের বাড়িতে হানা দেয় তারা। গৃহকর্তা আবার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। তাঁর বাড়িতেই চুরির ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকার মানুষজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হরিশচন্দ্র। বসে কথা বলছিলেন ভাইয়ের সঙ্গে। সেই সময় বাড়ির দরজা খোলাই ছিল। সেই সুযোগেই হাঁসুয়া এবং ভোজালি হাতে দুই চোর বাড়ির ভিতরে ঢোকে। গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করে।
বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন হরিশচন্দ্রের ভাই। কিন্তু তাঁকে পাকড়াও করে শৌচালয়ে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় চোরেরা। বিপদ বুঝে আর বাধা দেননি হরিশচন্দ্র। আলমারি থেকে ১৫ হাজার টাকা বার করে দিয়ে দেন তাদের।
তাতে মন ভরেনি চোরেদের। নিজেরা বাড়িতে ঢুকে মূল্যবান জিনিসের খোঁজে জিনিসপত্র ঘাঁটতে শুরু করে। বেশ খানিকটা খোঁজাখুঁজির পর পকেটস্থ করে দু’টি মোবাইল ফোনও। এরপরই ঘটে অদ্ভুত কাণ্ড। দুই চোরের মধ্যে একজন পা ছুঁয়ে হরিশচনদ্রকে প্রণাম করে ফেলে। সেই সময় তাদের কাছে হরিশচন্দ্র অনুরোধ করেন যাতে অন্তত কিছু টাকা তারা রেখে যায়। হরিশচন্দ্রের অনুনয় এড়িয়ে যায়নি ‘সহৃদয়’ দুই চোর। চুরির ১৫ হাজার টাকা থেকে ২০০ টাকা তাঁর হাতে দেয়। তরপর ফেরত দেয় একটি মোবাইল ফোনও। কাজ মিটিয়ে যে দরজা দিয়ে ঢুকেছিল, সেই দরজা দিয়েই বেরিয়ে যায় তারা। এরপর থানায় ফোন করে গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানান হরিশচন্দ্র। রাতেই তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হয় পুলিশ।
গোটা ঘটনায় বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন শিক্ষক হরিশচন্দ্র রায়। এই ঘটনার পর তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ফারাক্কা ব্যারেজে প্রচুর সংখ্যক সিআইএসএফ নিযুক্ত রয়েছে। ফারাক্কা থানা তাঁর বাড়ি থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে। তার পরেও এই ধরনের ঘটনা কিভাবে ঘটে তা নিয় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ফারাক্কা থানায়। চুরি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।