বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অতীতেও একাধিকবার সিবিআই (CBI) এবং ইডিকে (Enforcement Directorate) দিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিযোগ ওঠে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে। এহেন গুরুতর অভিযোগ তোলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই ধারা বজায় রেখে গতকাল ‘শহীদ দিবস’ সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে ‘মুড়ি খাওয়ানোর’ পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী আর তাঁর সেই বক্তব্যের চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতার বাড়িতে পৌঁছে গেল ইডি আধিকারিকরা। তাদের উদ্দেশ্য করেই এবার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) কটাক্ষ, “বাড়িতে থাকলে (ইডি আধিকারিকদের) মুড়ি খাওয়াতাম।”, যা ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, অতীতে সারদা-নারদা দুর্নীতি মামলা থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কয়লা পাচারের মতো একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল নেতার-নেত্রীদের জেরার মুখে পড়তে হয়। এ সকল ঘটনাকে উল্লেখ করে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আঙুল তোলে ঘাসফুল শিবির। এক্ষেত্রে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে চলেছে বিজেপি’ সম্পর্কিত গুরুতর অভিযোগও আনা হয়। সেই সূত্রে গতকাল একুশে জুলাই মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিবিআই এলে বলবেন আসুন, বসুন। আসন পেতে দেওয়ার পাশাপাশি মুড়ি খেতে দেবেন এবং সামনে গ্যাসের সিলিন্ডার রাখতে পারেন।”
উল্লেখ্য, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এদিন সকালে স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি স্থানে পৌঁছে যান ইডি অফিসাররা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশন দুর্নীতি মামলায় একাধিক তৃণমূল নেতার নাম জড়ায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে পরেশ অধিকারীর মতো নেতাদের সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়। পরবর্তীতে পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে শিক্ষকতার চাকরি থেকে বরখাস্ত করে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এবার এই প্রসঙ্গে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই পরেশবাবুর বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি। যদিও সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না তৃণমূল নেতা। সেই প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন, “আমি কলকাতায় এসেছি। তবে খবর পাওয়ার পর বাড়িতে ফোন করলেও কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। ওরা সব ফোন সংগ্রহ করে নিয়েছে। তবে আমি যদি বাড়িতে থাকতাম, তাহলে দিদির নির্দেশে মুড়ি খাওয়াতাম।”
প্রসঙ্গত, এদিন পরেশবাবু ছাড়াও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শান্তি প্রসাদ সিনহার বাড়িতেও পৌঁছে যায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ফলে একে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই ও ইডির তৎপরতা এবং অপরদিকে ‘মুড়ি’ প্রসঙ্গ বর্তমানে বঙ্গ রাজনীতিতে যে বিশেষ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বলাবাহুল্য।