বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব একটি পতাকা থাকে। যার মাধ্যমে সারা বিশ্বের দরবারে নিজের পরিচিতি তুলে ধরতে পারে সংশ্লিষ্ট দেশ। এমতাবস্থায়, ভারতও (India) তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই, আমাদের দেশের স্বাধীনতা দিবসের (Independence Day) কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। সর্বোপরি, চলতি বছর স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপন চলছে।
শুধু তাই নয়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী “Har Ghar Tiranga” কর্মসূচির আয়োজনও করেছেন। যার অধীনে, ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি নাগরিককে বাড়িতে তেরঙ্গা লাগানোর আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু, আপনি কি জানেন ২ আগস্ট অর্থাৎ আজকের দিনটির সাথে দেশের জাতীয় পতাকার (National Flag) একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি, প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর “মন কি বাত” অনুষ্ঠানেও এই প্রসঙ্গটির উল্লেখ করেছেন। মূলত, ২ আগস্ট হল পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার জন্মবার্ষিকী। যিনি আমাদের দেশের জাতীয় পতাকার নকশা করেছিলেন।
পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া কে ছিলেন: ১৮৭৬ সালের ২ আগস্ট পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া অন্ধ্র প্রদেশের মাছিলিপত্তনম শহরের কাছে ভাটলাপেনুমুরুতে জন্মগ্রহণ করেন। যুবক অবস্থায়, তাঁকে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসাবে যুদ্ধে লড়াই করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছিল। এমতাবস্থায়, দক্ষিণ আফ্রিকাতেই তিনি ব্রিটিশ সৈন্যদের মধ্যে ইউনিয়ন জ্যাক দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয়তাবাদের অনুভূতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
জানিয়ে রাখি, ভেঙ্কাইয়া আমাদের দেশের জাতীয় পতাকার একাধিক মডেল ডিজাইন করেছিলেন। যার মধ্যে ১৯২১ সালে, মহাত্মা গান্ধী বিজয়ওয়াড়ায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভায় একটি নকশা অনুমোদন করেন। মূলত, ভেঙ্কাইয়া গান্ধীজিকে যে সংস্করণটি উপস্থাপিত করেছিলেন সেটির দু’ধারে দুই রং (সবুজ এবং লাল) এবং কেন্দ্রে একটি চরকা ছিল। এমতাবস্থায়, গান্ধীর পরামর্শে, তিনি উপরে একটি সাদা রং যোগ করেন যা পরবর্তীতে তেরঙ্গা হয়ে উঠেছে।
তেরঙ্গাই হল ভারতের পতাকা: ১৯২১ সাল থেকে কংগ্রেসের সমস্ত সভায় ভেঙ্কাইয়ার নকশাকৃত ওই পতাকা ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও, ১৯৩১ সালের পরে, বর্তমান জাতীয় পতাকার নকশাটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হয়। এরপরে এটি মহাত্মা গান্ধীর অহিংস স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠে।
দারিদ্রে কাটে জীবন: পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া ১৯৬৩ সালে তীব্র দারিদ্রে ভুগে এবং বিস্মৃতির কবলে থাকা অবস্থায় মারা যান। ২০০৯ সালে তাঁর সম্মানে একটি ডাকটিকিট জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, ২০১৪ সালে, অল ইন্ডিয়া রেডিওর বিজয়ওয়াড়া স্টেশন তাঁর নামে নামাঙ্কিত হয়। এছাড়াও গত বছর, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন মোহন রেড্ডি তাঁকে “ভারতরত্ন” দেওয়ার জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন। সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সাম্প্রতিক “মন কি বাত” অনুষ্ঠানেও তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।