বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ থেকে দুই সপ্তাহ পূর্বেও ক্ষমতার অধিপতি ছিলেন তিনি আর বর্তমানে সকল ক্ষমতা হারিয়ে ইডির (ED) হেফাজতে দিন কেটে চলেছে একদা তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বদলে গিয়েছে বঙ্গ রাজনীতির সম্পূর্ণ চিত্র। এমনকি, পার্থের ঘনিষ্ঠ মহলের অনেকেই বর্তমান সময়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন আর এর মাঝে এবার বাংলার প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee)। বৈশাখীর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মনে বিদ্বেষ ছিল।”
সম্প্রতি, পার্থ ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে পঞ্চাশ কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না উদ্ধার করে ইডি। পরবর্তীতে পার্থ এবং অর্পিতা দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়। এরপরেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে দলীয় মহাসচিব সহ অন্যান্য একাধিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় পার্থকে। এদিন প্রাক্তন তৃণমূল মহাসচিবের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি জানান, “শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায় যথেষ্ট প্রভাবশালী এবং শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন। উনি সবসময় নিজেকে ‘নম্বর টু’ ভাবতেন। একবার উনি বলেছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী নাকি ওনার সব কথাতেই সিলমোহর দেন।” এরপরেই শোভন-বান্ধবী জানান, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মনে বিদ্বেষ ছিল। আমি শোভনকেও এই কথা বলেছিলাম, ও শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিল।”
বৈশাখীর মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এহেন পরিস্থিতির পিছনে দায়ী তাঁর অহংকার বোধ। পার্থের একদা সতীর্থ বৈশাখীর দাবি, “মন্ত্রিসভায় সবার থেকে নিজেকে উপরে ভাবতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সব সময় নিজেকে উপরে রাখতেন। ওর স্ত্রীর মৃত্যুর পর একবার আমাকে জানিয়েছিলেন যে, কবিতা লিখে এবং সিরিয়াল দেখে নাকি সময় কাটে। কবিতার বই বেরোনোরও নাকি কথা ছিল। জানিনা, কি হয়েছে?”
উল্লেখ্য, ইডি হেফাজতে থাকাকালীনই বেশ কয়েকবার শারীরিক পরীক্ষার জন্য ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থ-অর্পিতাকে। এর মাঝে কয়েকদিন পূর্বে পার্থ জানান যে, তাঁর সাথে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এদিন জিজ্ঞাসা করা হলে বৈশাখী জানান, “উনি প্রথমে কিছুই বলেননি আর এখন বলছেন ওনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু যদি সত্যিকারের ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে, তবে কারা করেছেন, সেটাও বলা উচিত। যেভাবে তাঁর ঘনিষ্ঠের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, যদি তার পেছনে কেউ জড়িত থাকে, তাহলে সত্য সবার সামনে আসা উচিত।”