বাংলাহান্ট ডেস্ক : কলকাতা হেয়ার স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ বর্ধমানে মেমারিতে তার নিজের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হল। অবসর পাওয়ার পর প্রায় তিন বছর হতে চলল কিন্তু বারবার বিকাশ ভবনে গিয়েও নাকি পেনশন পাচ্ছিলেন না তিনি। এই কারণেই চূড়ান্ত অবসাদে ভুগছিলেন কিছুদিন ধরেই। পেনশন না পাওয়ার অবসাদেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি , অভিযোগ শিক্ষকের পরিবারের।
হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন ই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন শিক্ষক শ্রী সুনীল কুমার দাস। অবসর পাওয়ার পর কেটে গেল গোটা তিন বছর কিন্তু একটি বারের জন্যও পেনশন এর মুখ দেখতে পাননি তিনি । তার স্ত্রী জানান, “পেনশন না পাওয়ার অবসাদে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি। বারবার বিকাশ ভবনে গিয়েও কোন সুরাহা হয়নি”
পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার অন্তর্গত রাজবাগান অঞ্চলের বাসিন্দা সুনীল বাবু। গতকাল তার নিজের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয় তার ঝুলন্ত নিথর দেহ। তার পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে শিক্ষারত্ন সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। তার কিছুদিন পরে সেপ্টেম্বর মাসেই অবসর পান। এরপর থেকে পেনশনের জন্য তিনি হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এই গোটা তিন বছরে পেনশনের জন্য তিনি তার পুরনো স্কুলে গিয়েছেন একাধিকবার। বিকাশ ভবনেও গিয়েছিলেন বহুবার। তিনি জানিয়েছিলেন যে পেনশন না পাওয়ায় এই করোনা পরিস্থিতিতে তার সত্যিই খুব অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু তবু মেলেনি কোন সুরাহা।
মৃত শিক্ষকের পরিবারের তরফ থেকে আরো জানানো হয়েছে যে তিনি অবসরের পরে পেনশন না পাওয়া সত্ত্বেও তার দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন এবং তার এক ছেলের পিএইচডি সম্পন্ন করিয়েছেন। আর কিছুদিনের মধ্যেই পিএইচডি শংসাপত্র পেয়ে যাবেন তার ছেলে ।এত সবকিছু একা হাতে কষ্টে সৃষ্টি চালাতে চালাতে ধীরে ধীরে অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি। ভীষণ বিধ্বস্ত বোধ করতেন তিনি সবসময়।
সুনীল বাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বর্ধমান এর মেমারি থানার পুলিশ। সেখান থেকে তার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজে।